—আমি আসবো সামনের অমাবস্যেতে, দেখিয়ে দেবো প্রণালীটা।
—ওসব হবে না ঠাকুর। আর ফাঁকি দিও না। আমাকে শেখাও।
— দুর খেপী, আমি কি জানি? তাঁর দয়া। আমি সাধনভজন করিও নে, মানিও নে-তবে দেখি তোমাদের এই পর্যন্ত।
—আমায় ঠকাতে পারবে না ঠাকুর। তুমি রোজ এখানে আসবে সন্দের পর। যত সব অজ্ঞান লোকেরা ভিড় করে রাতদিন; নিয়ে এসে ওষুধ, নিয়ে এসো মামলা জেতা, ছেলে হওয়া-
—সে তোমারই দোষ। সেটা না করতেই পারতে গোড়া থেকে। ধন্না দিতে দিলে কেন?
—তুমি ভুলে যাচ্চ। এ জায়গাটা গোরাসাহেবের বাংলা নয়—তবে এত লোক আসে কেন? ধর্মের জন্যে নয়। অবস্থা ঘোরাবার জন্যে। মামলা জেতবার জন্যে।
—সে তো বুঝি।
—একটু থেকে দেখবেন না দিনের বেলায়। এত রাতে আর কি আছে? চলে গেল সবাই। কি বিপদ যে আমার। সাধনভজন সব যেতে বসেছে, ডাক্তারবদ্যি সেজে বসেছি। শুধু রোগ সারাও, আর রোগ সারাও।
নালু পাল এ সব শুনে কিছু বুঝলে, কিছু বুঝলে না। ভবানী বাড়ুয্যেকে সে অনেকবার দেখেচে, দেওয়ান মহাশয়ের জামাই সুচেহারার লোক বটে, দেখলে ভক্তি হয়। বাড়ি ফিরে মাকে সে বল্পে—একটা চমৎকার জিনিস দেখলাম আজ! সনিসিনীর গুরু হলেন আমাদের দেওয়ানজির ভগ্নিপতি বড়দিদি- ঠাকরুণের বর। তিন দিদি-ঠাকরুণেরই বর! সব কথা বোঝলাম না, কি বল্লেন, কিন্তু সন্নিসিনী যে অত বড়, সে একেবারে তটস্থ।
তিলু বললে—এত রাত করলেন আজ। ভাত জড়িয়ে গেল। নিলু ইদিকি আয়, জায়গা করে দে—বিলু কোথায়?
নিল চোখ মুছতে মুছতে এল। রান্নাঘরের দাওয়া ঝাঁট দিতে দিতে বললে—