—মাছমাংস?
—কোনো আপত্তি নেই। তবে খাই না আজকাল। পেটে সহ্য হয় না।
—আমার স্ত্রীর হাতে খাবে?
—স্বপাক।
—যা তোমার ইচ্ছে।
তিলুকে কথাটা বলতেই তিলু বিনীতভাবে সন্ন্যাসীর কাছে এসে হাত জোড় ক'রে দাঁড়িয়ে বললে-দাদা-
পরমহংস বললেন—কি?
—আপনি আমার হাতের রান্না খাবেন না?
—কারো হাতে খাইনে দিদি। তবে ইচ্ছে হয়ে থাকে বেঁধে দিতে পারো। মাছ-মাংস কোরো না।
—মাছের ঝোল?
—না।
—কই মাছ, দাদা?
—তুমি দেখচি নাছোড়বান্দা। যা খুশি কর গিয়ে।
সেই থেকে তিলু শুচিশুদ্ধ হয়ে সন্নাসীর রান্না রাঁধে। বিলু নিলু যত্ন ক'রে খাবার আপন ক'রে তাঁকে খেতে ডাকে। তিন বোনে পরিবেশন করে ভবানী বাড়ুয্যে ও সন্ন্যাসীকে।
ইছামতীর ধারে যজ্ঞিডুমুর গাছতলায় সন্ধ্যার দিকে দুজনে বসেছেন। পরমহংস বললেন—হ্যাঁ হে, একে রক্ষা নেই, আবার তিনটি।•••
—কুলীনের মেয়ের স্বামী হয় না জানো তো? সমাজে এদের জন্যে আমাদের মন কাঁদে। সাধনভজন এ জন্মে না হয় আগামী জন্মে হবে। মানুষের দুঃখ তো ঘোচাই এ জন্মে। কি কষ্ট যে এদেশের কুলীন ব্রাহ্মণের মেয়ের।
—মেয়ে তিনটি বড় ভালো। তোমার খোকাকেও বেশ লাগলো।
—আমার বয়েস হোল বাহান্ন। ততদিন যদি থাকি, ওকে পণ্ডিত করে যাবো।