বেদান্তের সিদ্ধান্ত নিয়ে এসে ফেল্লে।
গীতার শ্লোক ওঠানোতে কি অন্যায় করলাম?
—গীতা হোল ভক্তিশাস্ত্র। অদ্বৈত বেদান্ত জ্ঞানের শাস্ত্র। দু’য়ে মিলিও না।
—ও কথাই বলো না। বড় কষ্ট হলো একথা তোমার মুখে শুনে। বেদান্তে ব্রহ্মই একমাত্র প্রতিপাদ্য বিষয়। অন্য সব দর্শনে ঈশ্বরকে স্বীকারই করে নি। একমাত্র বেদান্তেই ব্রহ্মকে খাড়া করে বসেছে। সেই বেদান্ত নিরীশ্বরবাদী।
—নিরীশ্বরবাদী বলি নি। ভক্তিশাস্ত্র নয় বলিচি।
—তুমি কিছুই জানে না। তোমাকে এবার আমি ‘চিৎসুখী’ আর ‘খণ্ডনখণ্ড খাদ্য’ পড়াবো। তুমি বুঝবে কি অসাধারণ শ্রদ্ধার সঙ্গে তাঁরা ব্রহ্মকে সন্ধান করেছেন। তবে বড় শক্ত দুরবগাহ গ্রন্থ। তর্কশাস্ত্র ভালো করে না পড়লে বোঝাই যাবে না। দেখবে বেদান্তের মধ্যে অন্য কোনো কুতর্কের বা বিকৃত ভায়ের ফাক বুজিয়ে দিয়েছে কি ভাবে। আর তুমি কি-না বলে বসলে
—আমি কিছুই বলে বসি নি। তুমি আর আমি অনেক তফাৎ। তুমি মহাজ্ঞানী—আমি তুচ্ছ গৃহস্থ। তুমি যা বলবে তার ওপর আমার কথা কি? আমার বক্তব্য অন্য সময়ে বলবো।
—বোলো, তুমি অনুরাগ শ্রোতা এবং বক্তা। তোমাকে শুনিয়ে এবং বলে মুখ আছে।
—তোমার সঙ্গে দুটো ভালো কথা আলোচনা করেও আনন্দ হোল। গ্রাম একেবারে অন্ধকারে ডুবে আছে। শুধু আছে নীলকুঠ মার সায়েব আর তুমি আর জমা আর বিষয় এই নিয়ে। আমার স্যালকটি তার মধ্যে প্রধান। তিনি নীলকুঠির দেওয়ান। সায়েব তাঁর ইষ্টদেব। তেমনি অত্যাচারী। তবে গোবরে পদ্মফুল আমার বড় স্ত্রী।
—ভালো?
—খুব। অতিরিক্ত ভালো।
—বাকী দুটি?
—ভালো, তবে এখনো ছেলেমানুষি যায় নি। আদুরে বোন কিনা