পাতা:ইছামতী - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।

একেবারে নালু পালের আশ্রয়স্থল ওদের বটতলায়, ওদের সামনে।

 বটতলায় পানের মোট মালিকহীন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে সাহেব হেঁকে বললে— এই! মোট কাহার আছে?

 নালু পাল ও সতীশ কলু ধানগাছের আড়ালে কাঠ হয়ে গিয়েচে ততক্ষণ। কেউ উত্তর দেয় না।

 টমটমের পেছন থেকে নফর মুচি আরদালি হাঁকল— কার মোট পড়ে রে গাছতলায়?

 সাহেব বললে—উট্টর ডাও— কে আছে?

 নালু পাল কাঁচুমাঁচু মুখে জোড় হাতে রাস্তায় উঠে আসতে আসতে বললে— সায়েব, আমার।

 সাহেব ওর দিকে চেয়ে চুপ করে রইল। কোনো কথা বললে না।

 নফর মুচি বললে—তোমার মোট?

 —আজ্ঞে হ্যাঁ।

 —কি করছিলে ধানক্ষেতে?

 —আজ্ঞে —আজ্ঞে—

 সাহেব বললে—আমি জানে। আমাকে ডেখে সব লুকায়। আমি সাপ আছি না বাঘ আছি। হ্যাঁ?

 প্রশ্নটা নালু পালের মুখের দিক তাকিয়েই, সুতরাং নালু পাল ভয়ে ভয়ে উত্তর দিলে——না সায়েব।

 —ঠিক। মোট কিসের আছে?

 —পানের, সায়েব।

 —মোল্লাহাটির হাটে নিয়ে যাচ্ছে?

 —হ্যাঁ।

 —কি নাম আছে টোমার?

 —আজ্ঞে, শ্রীনালমোহন পাল।

 —মাথায় করো। ভবিষ্যতে আমায় ডেখে লুকাবে না। আমি বাঘ নই, মানুষ