এখন লাঙল চষতি পারে। বড় ছেলেডা খুব জোয়ান হবে ওর বাবার মত।
—বৌটিকে আর দ্যাখো নি?
—না, তারপরই দু’বছর গারদ বাস। সে অন্য কারণে। এ ডাকাতির কিনারা হয় নি!
চৈতন্যভারতী বললেন—তোমার মুখে এ কাহিনী শুনে ভাবচি বৌমার সঙ্গে আমি দেখা করে আসবে। তারা কি জাত বললে?
—সদ্গোপ।
—আমি যাবো সেখানে। শক্তিমতী মেয়েরা জগদ্ধাত্রীর অবতার। তুমি ঠিকই বলেচ।
—বাবাঠাকুর, আপনি বোধ হয় ইদিকি আর কখনো আসেন নি, থাকেনও না। অমন কিন্তু এখানে আরো দু-চারটে আছে। তবে ভদ্দর গেরস্ত বাড়িতে আর দেখি নি ওই বৌটি ছাড়া। বাগদি, দুলে, মুচি, নমশুদ্দুরের মধ্যে অনেক মেয়ে পাবেন যারা ভাল সড়কি চালায়, কোঁচ চালায়, ফালা চালায়, কাতান চালায়।
নিলু বললে—আমি জানি। সেবার নীলকুঠির দাঙ্গায় দাদা স্বচক্ষে দেখেছেন খড়ের ছোট্ট চালাঘরের মধ্যে থেকে দুটো দুলেদের বৌ এমন তীর চালাচ্চে, নীলকুঠির বরকন্দাজ হটে গেল
—বাঃ বাঃ, বড় খুশি হলাম শুনে দিদি। ব্রহ্মদর্শনের আনন্দ হয় যদি এই শক্তিমতী মায়েদের একবার সাক্ষাৎ পাই। জয় মা জগদম্বা।
ভবানী বাঁডুয্যে এই সময় গাডু হাতে কোথা থেকে আসছিলেন, সেখান থেকে বলে উঠলেন—আরে, ও কি ভাষা! একেবারে মা জগদম্বা! নাঃ, বৈদান্তিক জ্ঞানীর ইয়েটা একেবারে নষ্ট করে দিলে?
—ভাই, নিত্য থেকে লীলায় নামলেই মা বাবা। বৈদান্তিকের তাতে কি মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে গেল! বলেচি তো তোমাকে সেদিন। বেদান্ত অত সোজা জিনিস নয়। অদ্বৈত বেদান্ত বুঝতে বহুদিন যাবে। জীব গোস্বামীর বেদান্ত বরং কিছু সহজ।