পাতা:ইতিকথার পরের কথা.pdf/১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বয়স্ক ভদ্রলোক। এক মুহূর্ত দাড়িয়ে, তাদের দোকানের দিকে এক নজর তাকিয়ে পা বাড়ায়। কিছু কেনার তাগিদ নেই। গজেন ডেকে বলে, বাবু যাবেন কোথা ? পান বিড়ি নিয়ে যান, আর পাবেন না । বারতলা যাব। পান বিড়ি খাই না বাবা । সনাতন চেষ্টা করতে ছাড়বে কেন ? সে চেচিয়ে বলে, সে তো দু-কোশ পথ বাবু। নতুন গুড়ের ভাল সন্দেশ ছিল, দুটো মুখে দিয়ে যান। এত রাতে গায়ে কিছু মিলবে না। কিন্তু। খানিকদূর এগিয়ে গিয়েছিল মানুষটা, থমকে দাড়ায়। গটগট করে ফিরে এসে দোকানের সামনে দাড়িয়ে বলে, কে ডাকলে সন্দেশ খেতে ? নতুন গুড়ের সন্দেশা! সব ব্যাটা সন্দেশ খাওয়ালো, বাকি আছ তুমি ! জীবন-ভোর জেল খাটিয়ে ঢের সন্দেশ খাইয়েছ, বুড়ে বয়সে আর তামাসা কেন বাবা ? মাথা থেকে চাদরটা খসে গেছে । বয়স ষাটের কম হবে না । গায়ের লোম ওঠা মোটা গরম চাদরটিতে বাড়িতে আপন হাতে সস্তায় সাফ করার চেষ্টাটা খুব স্পষ্ট, সাবান-কাচা ধুতি ও জামাটিতেও ইস্ত্রীহীনতার দীনতা। পায়ে বাদামী রঙের ক্যাম্বিশের জুতো। দোকানের আলোয় গভীর শ্রান্তি ও অবসাদের সঙ্গে তীব্র বিরক্তি মেশানো তার থমথমে মুখ দেখে সনাতন চুপ করে থাকে। গজেন বলে, ছি ছি, তামাসা কিসের ? রাত হয়েছে, গায়ের দিকে খাবার টাবার জুটবে না, তাই বলা— তবু গরম মেজাজ নরম হয় না ভদ্রলোকের। হঁ্যা হঁ্যা জানি, সব জানি । তাই বলা যে সন্দেশ খেয়ে যান ! লোক দেখে টের পাও না লাটবেলাটের গদি পায়নি, লাখ দু-লাখের পারমিট পায়নি ? খেতে জোটে না, ঠাণ্ড রাতে পায়ে হেঁটে চার মাইল পাড়ি দিচ্ছে, সন্দেশ খাবে ! স্বারা সব গুছিয়ে নিয়ে বসেছে, তাদের ডেকে সন্দেশ খাইও । আমাকে কেন ! পাগলাটে বুড়োর বাচালতা মনে হয় না, জোরের সঙ্গে গুছিয়ে বলার ভঙ্গিটা N