বৈজ্ঞানিক শুভ নিজের মনকে বলে, শাস্ত হও! শান্ত হও! : কিন্তু বলে কি সঙ্গে সঙ্গে শাস্ত করা যায় এখনকার এই মনকে ! একটা চাপাপড়া আগ্নেয়গিরির যেন বিস্ফোরণ ঘটেছে ভিতরে, হালকায় হলকায় বেরিয়ে আসছে ক্রোধের আগুন আর উন্মাদ লালসা । আচ্ছন্ন অভিভূত করে দিতে চাইছে বুদ্ধি ও চেতনাকে । কোমল কান্তিময়ী মায়ারা যেন ছায়া হয়ে দূরে সরে গিয়েছে, বন্ধ ঘরে কেবলি শাড়ি কেড়ে নেওয়া চলেছে মাটির কাছের খাটুয়ে চাষী মেয়ে লক্ষ্মীর ঠাসবুনানি দেহ থেকে। এটাই যেন তার চিরদিনের ধ্যানধারণা, এমনিভাবে শিকড় গেড়েছে। চিন্তাটা । চেষ্টা করেও মন থেকে তাড়াবার সাধ্য যেন তার হবে না । বৈঠকখানায় আরাম কেদারায় বসে জগদীশ তামাক টানছিল। তফাতে মেঝেতে উবু হয়ে বসেছিল বুড়ো ভীম মণ্ডল। তার হাত দুটি জোড় করা। জগদীশ উদ্বেগের সঙ্গে জিজ্ঞাসা করে, কি হয়েছে শুভ ? তোমার মুখ “এমন দেখাচ্ছে কেন ? কিছু হয় নি-এমনি । জগদীশ ক্ষুব্ধ চোখে তাকায়। মাঝে মাঝে কি যে হয় শুভর, একটা কথা জিজ্ঞাসা করলে দাড়িয়ে ভাল করে জবাবটা পর্যন্ত দেয় না, এমনভাবে অবজ্ঞা করে চলে যায় । এই একটা মারাত্মক দোষ একালের শিক্ষার । 皆 অন্দরের বারান্দায় সাবিত্রীর চুলে তেল মাখিয়ে দিছিল কাদম্বিনী। সাবিত্রীও ছেলের মুখ দেখে ভড়কে গিয়ে জিজ্ঞাসা করে, কি হয়েছে শুভ ? ওনার সঙ্গে আবার- ? শুভ নীরবে মাথা নাড়ে। কয়েক মুহুর্তে মা আর কাদম্বিনীর দিকে চেয়ে থেকে সে নিজের ঘরে চলে যায় । ঘরে হালকা আসবাব । স্তরে স্তরে সাজানো বই । একটা মোটা বই টেনে নিয়ে শুভ চেয়ারে বসে। বইয়ে মন বসাবার চেষ্টা করার দরকার হয় না। ইতিমধ্যেই প্রতিক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছিল। SW 9
পাতা:ইতিকথার পরের কথা.pdf/১৩৯
অবয়ব