পাতা:ইতিকথার পরের কথা.pdf/১৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লক্ষ্মী হেসে বলে, বেশ । আমি রাজী আছি। ব্যবস্থা করে ফেল । শহর থেকে আনা দোক্তা দিতে গিয়ে কৈলাস বলে এসেছিল, কথা আছে, শুনে যেও । , শনিবার শহর থেকে ফিরতে কৈলাসের সন্ধ্যা হয়ে যায়। সন্ধ্যার পর দোক্তা দিতে গিয়ে বিশেষ কথা আছে জানিয়ে এলে কাক-ডাকা ভোরে লক্ষ্মী জলার দিকে যায় কথা শুনতে । সেদিন লক্ষ্মী ভোর পর্যন্ত ধৈর্য ধরতে পারেনি। কৈলাসের অতিরিক্ত শান্ত ভাবটা তাকে ভাবিয়ে তুলেছিল। ঘণ্টাখানেক নিজের মনে টালবাহানা করে সন্ধ্যা রাত্রে নিজেই এসে হাজির হয়েছিল। কৈলাসের বাড়ি । পুরানো লন্ঠনের আলোয় কৈলাস সংসারের হিসাবপত্র দেখছিল। বাড়তি “লণ্ঠনের এই একটি। রান্নাঘরে ডিাবরি জ্বলছে। বাড়তি অন্য ঘর দু-খানা অন্ধকার। পাড়াগায়ে অন্ধকার অভ্যাস হয়ে যায় মানুষের, কিন্তু আলোর টান যাবে কোথা ? কৈলাসের মা রান্নাঘরে রাধছে, বাড়ির বাকি মানুষেরা এসে জমেছে লণ্ঠনের আলোয়। তাতে অসুবিধা হয়নি। ঘরের বাইরে দাওয়ার একপাশে মুখোমুখি উৰু হয়ে তারা কথা কয়। সকলের পছন্দ না হলেও এ অধিকার তাদের স্বীকৃত। নানা আন্দোলনে থাকবে, পরামর্শ না করলে তাদের চলবে কেন ? ঘরের চালায় অর্ধেকটা আকাশ আড়াল হয়েছে, কৃষ্ণপক্ষের উজ্জল তারায় ভরে আছে। আকাশ । বিবি পোকার অবিরাম গুঞ্জনে আরও নিবিড় হয়েছে স্তব্ধতা, রাত্রিচর পশুপাখির চিৎকারে যা এক্রমাগতই ভেঙে যায় । কৈলাস বলে, দ্যাখো, আমি ওসব ভেবেছি। লোকের চোখে হীন হয়ে যাব, এ অঞ্চলে আর বাস করা যাবে না। কিন্তু কি আর এমন আসবে যাবে তাতে ? আমরা যদি খাটি থাকি, লড়াই যদি টিকিয়ে রাখি-ফের দশজনের আদর পাব। হেথা যা ভেঙে পড়বে, ফের তা গড়ে তুলব। ধর্ম নিয়ে মোদের কি এল গেল ? একটা উপায় যখন আছে, ছাড়ি কেন ? এ তো ঢের পুরানো উপায়। অ্যাদিনে তোমার খেয়াল হল ? S bም 8