পাতা:ইতিকথার পরের কথা.pdf/২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কৈলাস শহয়ে কাজ করে, প্রতি সপ্তাহে বাড়ি আসে। লক্ষ্মীকে ভালো দোক্তণপাতা এনে দেবার দায়িকটা তাকে স্থায়ীভাবে দেওয়া আছে। সেও খুশী হয়ে দায়িত্ব পালন করে। এ সপ্তাহে অসুখ হয়ে বাড়িতে আটকে যাওয়ায় লক্ষ্মীর তামাকপাত শহর থেকে সময়মত আনা হয়নি। কৈলাস বলে, সে জিনিস এদিকে কোথা পাব ? একটু তামাকপাত এনে দেয়, তাতেই দেমাক কত ? মুখে পিক জমেছে, ঠোট বেঁকিয়ে চেপে চেপে লক্ষ্মীকে কথা কইতে হয়। জীবন তীব্র দৃষ্টিতে তাকে লক্ষ্য করে, যেন ভস্ম করে ফেলবে। অসন্তোষ চাপিতে না পেরে বলে বসে, মেয়েদের নেশা করা উচিত নয় । মুখে আঁচল চাপা দিয়ে লক্ষ্মী ঘরের মধ্যে গিয়ে জানালার ফঁাকে পিক ফেলে আসে। নিজের মনে বলে, একটা পান পর্যন্ত দিলে না কেউ । পান দেওয়া বন্ধ করাও আইন হয়েছে না কি রে বাবা ! অল্পবয়সী সেই বৌটি একগাল হেসে চুনসুপারিখয়ের দিয়ে একটা বেঁটাশুদ্ধ আন্ত পান তাকে এনে দেয়, তেমনি মৃদু। কিন্তু দৃঢ়স্বরে বলে, লক্ষ্মীদি আর সব পারে, শুধু পানটি নিজে নিয়ে খেতে পারে না ! কেন খাব ? পান কি নিয়ে খাবার জিনিস ? নিজের ঘরেও নয় ? এতটুকু গেয়ে বেী, বয়সে কিশোরী, তার পাকা কথা দৃঢ় আচরণ জীবনকে আশ্চর্য করে দেয় । সেটা লক্ষ্য করে রসিক পরিচয় দিয়ে বলে, এটি আমাদের লোচনের ছোট ছেলের বেী । এ ঘরটা আজ্ঞ লোচনের। পাঁচ-ছ মাস হল ছেলেটির কোন খোঁজখবর নেই। বৌটি প্রতিমার মত দাড়িয়ে শোনে। জীবন বলে, পালিয়ে গেছে ? লোচন আগাগোড়াই কথা বলছিল কম, এবার সে নিশ্বাস ফেলে বলে, সেটার কথা বাদ দেন। নিজেরও মাথা খারাপ হল, বৌটার মাথাও বিগড়ে দিয়ে গেল । % ግ ইতিকথা-২