পাতা:ইতিকথার পরের কথা.pdf/২৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গেছে। সে জন্য কাকে দায়ী করব জানি না। তোমার ঠাকুর্দাকে ভুলো নাজগদীশ তার বাডির আঁতুড়ে অসহায় শিশু হয়েই জন্মেছিল, তার হাতে মানুষ। হয়েছিল, আকাশ থেকে পড়েনি। অন্য দোষগুণ জানি না, কিন্তু ওর পুত্রস্নেহ নেই, একথা তুমিও বলতে পারবে না। আমাদের দশজনের বরং এমন স্নেহ দেখা যায় না। লোকে ভগবানের জন্য পাগল হয়, জগদীশ তোমার জন্য পাগল। তোমার মন ভেজাতে বাড়িয়ে বলছি না, একটা মিটমাট না হলে মানুষটা সত্যি পাগল হয়ে যাবে। ভাবের পাগল নয়-যাদের দড়ি দিয়ে বঁধবারও দরকার হয় । শুভ পাংশু মুখে বলে, তাই কখনো হতে পারে ? হতে পারে না । ছেলের জন্য মানুষ পাগল হয়ে যায় না ? সারা জীবন ধরে এই জন্যেই তো প্রস্তুত হয়ে এসেছে জগদীশ-তেমন একটা শক লাগলে ব্রেনটা বিগড়ে যাবে। তবে অন্য ভাবে ওরকম শক লাগবার চান্স নেই—শুধু তোমার দিক থেকে লাগতে পারে । শুভ অসহায়েব মত চেয়ে থাকে। স্নেহাতুর পিতারূপী জগদীশকে সে যেন ভুলে গিয়েছিল। কিন্তু মনে পড়লে তো আর অস্বীকার কবা যায় না। এই অতি বাস্তব সত্যটাকে । কত অসংখ্য প্রমাণ আর পরিচয় স্মৃতিতে জমা হয়ে আছে। জগদীশের এই অন্ধ উন্মাদ স্নেহের। আজও সে একটু বেড়াতে বার হলে জগদীশ কিরকম উৎকণ্ঠিত হয়ে থাকে, বাড়ি ফেরামাত্র খবর পৌছলে তবে স্বস্তি পায়, এসব তো তার অজানা নয় । এই স্নেহের লাগামেই তো এতদিন জগদীশের একেবারে জন্মগত প্রকৃতিগত জমিদারি দাপট একটু সংযত রাখতে পেরেছে। সহজ কিন্তু ভৎসনার সুরে ভূদেব এবার বলে, নিজের বাপের জীবনের ট্রাজেডিট কখনো চিন্তা করে দ্যাখে না । দুটো জীবনে পা দিয়ে চলতে হয়েছে বেচারাকে । সেকেলে জমিদারও রইল। আবার আমাদের দলেও ভিড়ল। দুটো জীবন টেনে আসছে বরাবর। আর সব তাই দাড়িয়ে গেছে ফাঁকি-একমাত্র সম্বল তুমি। তুমি ছাড়া খাটি কিছুই নেই। ওর জীবনে-সব মেশাল আর ভেজাল । R8 è ইতিকথা-১৬