উচিত; আর, পুরাণাদিকে যদি শাস্ত্র বলিয়া মানিতে হয়, তবে ছিলেনও তিনি তাই। যক্ষরাজ কুবেরের রূপ ছিল অনার্যোচিত; আর, তিনি ধনপতি নামে বিখ্যাত। প্রাচীন ভারতে ধন শব্দে বিশিষ্টরূপে গোমেষাদি পশুধনই বুঝাইত। ইহাতেই বুঝিতে পারা যাইতেছে যে, পশুজীবী মোগল তার প্রভৃতি জাতিরাই প্রাচীন ভারতের আর্যদিগের ইতিহাসে যক্ষ নাম প্রাপ্ত হইয়াছিল। কি পশুহন্তা কিরাত জাতি, কি পশুপালক মোগল জাতি—উভয়েই কৃষিকার্য-বিষয়ে সমান অনভিজ্ঞ ছিল। এখন জিজ্ঞাস্য এই যে, ধনুর্ভঙ্গের ব্যাপারটিকে কোপ্রকার বিঘ্নভঙ্গ বলিব? কিরাতদিগের পশুঘাতী ধনুর্ভঙ্গ বলিব? না রাক্ষসদিগের বিষদাত-ভঙ্গ বলিব? আমার বোধ হয় প্রাচীনকালে ভারতের উত্তরদক্ষিণের মধ্যে একটা ঐতিহাসিক যোগসেতু বর্তমান ছিল; কেননা লঙ্কাপুরী প্রথমে কুবেরের ছিল, পরে তাহা রাবণ বলপূর্বক হস্তগত করিয়াছিল। রাবণ এবং কুবের যে একই পিতার পুত্রদ্বয় ইহা কাহারও অবিদিত নাই।
পরবর্তীকালে রবীন্দ্রনাথ বিষয়টি লইয়া পুনরায় আলোচনা করেন, তাহা A Vision of India's History নামে বিশ্বভারতীয় কোয়াটার্লি পত্রে (১৯২৩ এপ্রিল) ও পরে ঐ নামে পুস্তকাকারে (১৯৫১ নভেম্বর) প্রকাশিত হয়।
বাংলা প্রবন্ধটি পরিচয় পুস্তকে (১৯১৬: ১৩২৩) প্রথম সংকলিত হয়, পরে সমাজ গ্রন্থের নূতন সংস্করণে (১৩৪৪) গৃহীত হয়।
- ৩ এই রচনা শান্তিনিকেতন ব্রহ্মচর্যাশ্রমের প্রাক্তন অধ্যাপক[ ৫ ]