Ws ইন্দির বেহার পাঠাইলাম, বধুমাতাকে এ বাটতে পাঠাইয়া দিবেন। নচেৎ আজ্ঞা করিলে পুত্রের বিবাহের আবার সম্বন্ধ করিব।” - পিতা দেখিলেন, নূতন বড়মানুষ বটে। পাল্কীখানার ভিতরে কিংখাপ মোড়, উপরে রূপার বিট, বাটে রূপার হাঙ্গরের মুখ। দাসী মাগী যে আসিয়াছিল, সে গরদ পরিয়া আসিয়াছে, গলায় বড় মোট সোনার দান । চারি জন কালে দাড়িওয়ালা ভোজপুরে • পান্ধীর সঙ্গে আসিয়াছিল। আমার পিতা হরমোহন দত্ত বুনিয়াদি বড়মানুষ, হাসিয়া বলিলেন, “ম ইন্দিরে। আর তোমাকে রাখিতে পারি না। এখন যাও আবার শীঘ্র লইয়া আসিব । দেখ, আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ দেখিয়া হাসিও না ।” মনে মনে বাবার কথার উত্তর দিলাম। বলিলাম, আমার প্রাণটা বুঝি আঙ্গুল ফুলিয়া কলাগাছ হইল ; তুমি যেন বুঝিতে পারিয়া হাসিওঁ না।” আমার ছোট বহিন কামিনী বুঝি তা বুঝিতে পারিয়াছিল —বলিল, “দিদি । আবার আসিবে কবে ? আমি তাহার গাল টিপিয়া ধরিলাম। কামিনী বলিল, “দিদি, শ্বশুরবাড়ী কেমন, তাহ কিছু জানিস না ?” আমি বলিলাম, “জানি। সে. নন্দন-বন, সেখানে রতিপতি পারিজাত ফুলের বাণ মারিয়া লোকের জন্ম সার্থক করে। সেখানে পা দিলেই স্ত্রীজাতি অঙ্গরা হয়, পুরুষ ভেড়া হয়। সেখানে নিত্য কোকিল ডাকে, শীতকালে দক্ষিণে বাতাস বয়, অমাবস্তাতেও পূর্ণচত্র উঠে " o - কামিনী হাসিয়া বলিল, “মরণ আর কি ” --- দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ শ্বশুরবাড়ী চলিলাম ভগিনীর এই আশীর্ব্বাঙ্গ লইয়া আমি শ্বশুরবাড়ী যাইতেছিলাম। আমার শ্বশুরুবাড়ী মনোহরপুর। আমার পিত্রালয় মহেশপুর। উভয় গ্রামের মধ্যে দশ ক্রোশ পথ, সুতরাং প্রাতে আহার করিয়া যাত্রা করিয়াছিলাম, পৌছিতে পাঁচ সাত দণ্ড রাত্রি হইবে, জনিতাম ।
পাতা:ইন্দিরা-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১০
অবয়ব