চতুর্থ পরিচ্ছেদ : এখম যাই কোথায় ? չér: তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলাম যে, মহেশপুর কোথায় ? মনোহরপুরই বা কোথায়? প্রাচীন বলিল, “ম, তুমি কে ? অমন মুন্দর মেয়ে কি পথে ঘাটে এক বেরুতে আছে ?” আহা মরি, মরি, কি রূপ গা ! তুমি আমার ঘরে আইস ।” তাহার ঘরে গেলাম। লেঃ আমাকে ক্ষুধাতুরা দেখিয়া গাইটি চুইয়া একটু দুধ খাইতে দিল। সে মহেশপুর চিনিত। তাহাকে আমি বলিলাম যে, তোমাকে টাকা দেওয়াইব—তুমি আমাকে সেখানে রাখিয়া আইল । তাহাতে সে কহিল যে, আমার ঘর সংসার ফেলিয়া যাইব কি প্রকারে? তখন । সে যে পথ বলিয়া দিল, আমি সেই পথে গেলাম। সন্ধ্য পর্য্যস্ত পথ হাটিলাম—তাহাতে অত্যন্ত শ্রাস্তি বোধ হইল। এক জন পথিককে জিজ্ঞাসা করিলাম, “হ গ, মহেশপুর এখান হইতে কত দূর ?” সে আমাকে দেখিয়া স্তম্ভিতের মত রহিল। অনেকক্ষণ চিন্তা করিয়া কহিল, “তুমি কোথা হইতে আসিয়াছ ? যে গ্রামে প্রাচীন আমাকে পথ বলিয়া দিয়াছিল, আমি সেই গ্রামের নাম করিলাম। তাহাতে পথিক কহিল যে, “তুমি পথ ভুলিয়াছ, বরাবর। উণ্টা আসিয়াছ। মহেশপুর এখান হইতে এক দিনের পথ ।” আমার মাথা ঘুরিয়া গেল। আমি তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলাম, “তুমি কোথায়, যাইবে ?” সে বলিল, “আমি এই নিকটে গৌরীগ্রামে যাইব ।” আমি অগত্য। তাহার পশ্চাৎ পশ্চাৎ চলিলাম । গ্রামমধ্যে প্রবেশ করিয়া সে আমাকে জিজ্ঞাসা করিল, “তুমি এখানে কাহার বাড়ীযাইরে ?” আমি কহিলাম, “আমি এখানে কাহাকেও চিনি না। একটা গাছতলায় শয়ন করিয়া থাকিব ।” পথিক কহিল, “তুমি কি জাতি ?” আমি কহিলাম, “আমি কায়স্থ ।” সে কহিল, “আমি ব্রাহ্মণ । তুমি আমার সঙ্গে আইস । তোমার ময়ল মোট কাপড় বটে, কিন্তু তুমি বড় ঘরের মেয়ে । ছোট ঘরে এমন রূপ হয় না।” ছাই রূপ। ঐ রূপ, রূপ শুনিয়া আমি জ্বালাতন হইয়া উঠিয়াছিলাম, কিন্তু এ ব্রাহ্মণ প্রাচীন, আমি তাহার সঙ্গে গেলাম। আমি সে রাত্রে ব্রাহ্মণের গৃহে দুই দিনের পর একটু বিশ্রাম লাভ করিলাম। এই দয়ালু বৃদ্ধ ব্রাহ্মণ যাজক, পৌরোহিত্য করেন। আমার বস্ত্রের অবস্থা দেখিয়া ৰিম্মিতঃ হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “ম, তোমার কাপড়ের এমন দশ। কেন ? তোমার কাপড় কিয়
পাতা:ইন্দিরা-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১৭
অবয়ব