একাদশ পরিচ্ছে একটা চোরা চাহনি ৪% । কিছু সম্বন্ধ ছিল। আজ শুনিলাম, তাহাকে মধ্যাহ্নে আহারের নিমন্ত্রণ করা হইয়াছে। । তাই পাকশাকের কিছু বিশেষ আয়োজন হইতেছে। o” রান্না ভাল চাই—অতএব পাকের ভারটা আমার উপর পড়িল। যক্ষ করিয়া পাক । করিলাম। আহারের স্থান অন্তঃপুরেই হইল। রামরাম বাবু, রমণ বাবু, ও নিমন্বিত ব্যক্তি আহারে বসিলেন। পরিবেশনের ভার বুড়ীর উপর—মামি বাহিরের লোককে কখন পরিবেশন করি না। বুড়ী পরিবেশন করিতেছে—আমি রান্নাঘরে আছি—এমন সময়ে একটা গোলযোগ উপস্থিত হইল। রমণ বাবু বুড়ীকে বড় ধমকাইতেছিলেন। সেই সময়ে এক জন রান্নাঘরের ঝি আসিয়া বলিল, “ইচ্ছে ক’রে লোককে অপ্রতিভ করা।” জিজ্ঞাসা করিলাম, “কি হয়েছে ?” ঝি বলিল, “বুড়ী দাদা বাবুর বাটিতে (বুড়া বি, দাদাবাবু বলিত )—বাটিতে ডাল দিতেছিল—তিনি তা দেখেও উহু । উহু । ক’রে হাত বাড়িয়ে দিলেন—সব ডাল হাতে পড়িয়া গেল।” আমি এদিকে শুনিতেছিলাম, রমণ বাবু বামনীকে ধমকাইতেছেন, “পরিবেশন করতে জান না ত এসো কেন ? আর কাকেও থাল দিতে পার নি ?” রামরাম বাবু বলিলেন, “তোমার কর্ম্ম নয়। কুমোকে পাঠাইয়া দাও গিয়া।” গৃহিণী সেখানে নাই, বারণ করে কে ? এদিকে খোদ কর্ত্তার হুকুম—অমান্তই বা করি কি প্রকারে ? গেলেই গিল্পী বড় রাগ করিবেন, তাও জানি । দুই চারিবার বুড়ীকে বুঝাইলাম—বলিলাম, “একটু সাবধান হয়ে দিও খুইও—কিন্তু সে ভয়ে আর যাইতে স্বীকৃত হইল না। কাজেই, আমি হাত ধুইয়া, মুখ মুছিয়া, পরিষ্কার হইয়া, কাপড়খানা গুছাইয়া পরিয়া, একটু ঘোমটা টানিয়া, পরিবেশন করিতে গেলাম। কে জানে যে এমন কাণ্ড বাধিবে ? আমি জানি যে, আমি বড় বুদ্ধিমতী—জানিতাম না যে, স্বভাষিণী আমায় এক হাটে ৰেচিতে পারে, আর এক হাটে কিনিতে পারে। আমি অবগুণ্ঠনবতী, কিন্তু ঘোমটায় স্ত্রীলোকের স্বভাব ঢাকা পড়ে মা । ঘোমটার ভিতর হইতে একবার নিমন্ত্রিত বাবুটকে দেখিয়া লইলাম। দেখিলাম, তাহার বয়স ত্রিশ বৎসর বোধ হয় ; তিনি গৌরবর্ণ এবং অত্যন্ত সুপুরুষ ; র্তাহাকে দেখিয়াই রমণীমনোহর বলিয়া বোধ হইল। আমি বিদ্যুচ্চমকিতের স্বায় একটু অন্যমনস্ক হইলাম। মাংসের পাত্র লইয়া একটু দাড়াইয়৷ রছিলাম, আমি ঘোমটার ভিতর w
পাতা:ইন্দিরা-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৪৫
অবয়ব