ইন্দির। سوريا) আমি । তুমি মা হয়, জামাকে সব শিখাইয় পড়াইয়। রাখিবে । তিনি। তা ত মনে করিয়াছি। কিন্তু সব কথা ত শিখান যায় না। মনে কর, যদি যে কথা শিখাইতে মনে হয় মাই, এমন কথা পড়ে, তবে ধরা পড়িৰে । মনে কর, যদি কখন আসল ইন্দিরা আসিয়া উপস্থিত হয়, উভয়ের মধ্যে বিচারকালে, পুর্ব্বকথা জিজ্ঞাসাবাদ হুইলে তুমিই ধরা পড়িবে। - আমি একটু হাসিলাম । এমন অবস্থায় হাসিট। আপনি আসে । কিন্তু এখন , আমার প্রকৃত পরিচয় দিবার সময় হয় নাই। আমি হাসিয়া বলিলাম, “আমায় কেহ ঠকাইতে পারে না । তুমি এইমাত্র আমায় জিজ্ঞাসা করিতেছিলে যে, আমি মানুষী কি মায়াবিনী । আমি মানুষী নহি, (তিনি শুনিয়া শিহরিয়া উঠিলেন ) আমি কি, তাহ পরে বলিব। এখন ইহাই বলিব যে, আমাকে কেহ ঠকাইতে পারে না ।” স্বামী মহাশয় স্তম্ভিত হইলেন। তিনি বুদ্ধিমান কর্ম্মঠ লোক। নহিলে এত অল্প দিনে এত টাকা রোজগার করিতে পারিতেন না। মানুষট বাহিরে একটু নীরস,—কাঠ কাঠ রকম, পাঠক তাহা বুঝিয়া থাকিবেন—কিন্তু ভিতরে বড় মধুর, বড় কোমল, বড় স্নেহশালী –কিন্তু রমণ বাবুর মত, এখনকার ছেলেদের মত, “উচ্চ শিক্ষায়” শিক্ষিত নহেন। তিনি ঠাকুর দেবতা খুব মানিতেন। নানা দেশে ভ্রমণ করিয়া, ভূত প্রেত, ডাকিনী যোগিনী, যোগী মায়াবিনী প্রভৃতির গল্প শুনিয়াছিলেন। সে সকল একটু বিশ্বাস করিতেন। তিনি আমার দ্বারা যেরূপ মুগ্ধ হইয়াছিলেন, তাহাও তাহার এই সময়ে স্মরণ হইল ; যাহাকে আমার অসাধারণ বুদ্ধি বলিতেন, তাহাও স্মরণ হইল ; যাহা বুঝিতে পারেন নাই, তাহাও । স্মরণ হইল। অতএব আমি যে বলিলাম, আমি মানুষী নহি, তাহাতে র্তাহার একটু বিশ্বাস হইল। তিনি কিছু কাল স্তম্ভিত ও ভীত হইয়া রছিলেন। কিন্তু তার পর নিজ বুদ্ধিবলে, সে বিশ্বাসটুকু দূর করিয়া বলিলেন, “আচ্ছ, তুমি কেমন মায়াবিনী, আমি যা জিজ্ঞাসা করি, বল দেখি ?” - আমি । জিজ্ঞাসা কর । তিনি। আমার স্ত্রীর নাম ইন্দির, জান । তার বাপের নাম কি ? : আমি । হরমোহন দত্ত । তিনি। তার বাড়ী কোথায় ? আমি । মহেশপুর। তিনি। তুমি কে ॥
পাতা:ইন্দিরা-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৭০
অবয়ব