একবিংশতিতম পরিচ্ছেদ : সেকালে যেমম ছিল at কুমুদিনী।” কামিনী রাগে দশখানা হইয়া বলিল, “আঃ পোড়া কপাল। এই বুদ্ধিতে টাকা রোজগার করেছ ? কোদাল পাড় নাকি ? এ কুমুদিনী না-ইন্দিরে—ইন্দিরে— ইন্দিরে ৷ তোমার পরিবার! আপনার পরিবার চিনতে পার না ?” - তখন স্বামী মহাশয় আহলাদে অজ্ঞান হইয়। আমাকে কোলে টানিয়া লইতে গিয়া কামিনীকেই কোলে টানিয়া লইলেন। সে র্তার গালে এক চড় মারিয়া হাসিতে হাসিতে চলিয়া গেল। - সে দিনের আহ্বাদের কথা বলিয়া উঠিতে পারি না। বাড়ীতে খুব উৎসব বাধিল । সেই রাত্রে কামিনীতে আর উ-বাবুতে প্রায় এক শত বার বাগযুদ্ধ হইল। সকল বারই প্রাণনাথ হারিলেন । একবিংশতিতম পরিচ্ছেদ সেকালে যেমন ছিল কালাদীঘির ডাকাইতির পর আমার অদৃষ্টে যাহা ঘটিয়াছিল, স্বামী মহাশয় এক্ষণে আমার কাছে সব শুনিলেন। রমণ বাবু ও স্বভাষিণী যেরূপ যড়যন্ত্র করিয়া তাহাকে কলিকাতায় লইয়া গিয়াছিল, তাহাও শুনিলেন। একটু রাগও করিলেন। বলিলেন, “আমাকে এত ঘুরাইবার ফিরাইবার প্রয়োজনটা কি ছিল ?” প্রয়োজনটা কি ছিল, তাহাও বুঝাইলাম। তিনি সন্তুষ্ট হইলেন। কিন্তু কামিনী সন্তুষ্ট হইল না। কামিনী বলিল, “তোমায় ঘানিগাছে ঘুরায় নাই, অমনি ছাড়িয়াছে, এইটুকু দিদির দোষ। আবার আবার নিলেন কিনা, গ্রহণ করব না । আরে মিন্সে, যখন আমাদের আলতা-পরা শ্রীপাদপদ্মখানি ভিন্ন তোমার জেতের গতিমুক্তি নাই, তখন অত বড়াই কেন ?” উ-বাবু এবার একটা উতোয় মারিলেন, বলিলেন, “তখন চিনিতে পারি নে যে। তোমাদের কি চিনতে জোওয়ায় ?” o - কামিনী বলিল, “তুমি যে চিনিবে, বিধাতা ত কপালে লিখেন নাই। যাত্রায় শোন নি ? বলে, ধবলী বলিল শু্যাম, কে চেনে তোমারে । চিনি শুধু কাচা ঘাস যমুনার ধারে ॥
পাতা:ইন্দিরা-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৭৭
অবয়ব