আলস্য ও ঔদাস্তের অবস্থা নহে। এদিকে উচ্চবংশীয় লোকেরা ধন মান লইয়া জন্ম গ্রহণ করেন, এবং তন্নিমিতেই নির্ব্বোধ লোকের পূজনীয় হয়েন। যেরূপ কর্ম্ম কার্য্য ও ভাবনা চিন্তা থাকিলে চিত্তের উৎকর্ষতা সম্পন্ন হইতে পারে, তাহা তাহাদের নাই; কেবল অর্থ ও অভিমান আছে। অতএব ইহা আশ্চর্য্যের বিষয় নহে যে, তাঁহারা ধনাধিক্য ও বিলাস-পারিপাট্য ব্যতীত আর সকল বিষয়েই মধ্যমশ্রেণীয় জনাপেক্ষা অনেক নিকৃষ্ট। উচ্চবংশীয়েরা বুঝিয়াছেন যে, তাঁহাদিগের প্রভুত্ব দিন দিন খর্ব্ব হইয়া আসিতেছে ও আর্য্য সভার আর পূর্ব্ববৎ ক্ষমতা নাই; কিন্তু তাহা জানিয়া কি করিবেন এবং যে সাধারণ উন্নতি ও স্বাধীনতা ইউরোপে দিন দিন বৃদ্ধি পাইয়া লোকের হিতসাধন করিতেছে, তাহার বিরুদ্ধাচরণ করিয়াই বা কি করিবেন? তাঁহারা অগত্যা বাহ্য সম্মানে সন্তুষ্ট হইতেছেন। ইংলণ্ডের সর্বোচ্চশ্রেণীর কথা এই পর্য্যন্ত বলিয়া সর্ব্বনিম্নশ্রেণীস্থ অর্থাৎ শ্রমোপজীবী লোকদিগের কথা কিছু বলিতেছি। আমি আপনাকে বারম্বার বলিয়াছি যে, এক জন বিদেশীয় লোক ইংলণ্ডে আসিলে সর্ব্বত্রেই স্বাধীনতা ও স্বাবলম্বনের ভাব জাজ্জ্বল্যমান দেখিয়া চমৎকৃত হয়। ইংলণ্ডীয় ভৃত্য ও শ্রমীদিগেরও সাতিশয় আত্মমর্য্যাদা ও স্বাধীনতা আছে, তন্নিমিত্তে প্রভু ভৃত্যের প্রতি এত সদ্ব্যবহার করিয়া থাকে যে, পূর্ব্বদেশে কেহ সেরূপ দেখে নাই ও শুনে নাই। এখানকার ভৃত্যগণ ভক্তি সহকারে উত্তমরূপে কার্য্য করিবে, কিন্তু তোষামোদ বা ন্যূনতা স্বীকার করিবে না; কারণ তোষামোদ তাহার চুক্তির মধ্যে নাই।
পাতা:ইয়ুরোপে তিন বৎসর.djvu/৫৬
অবয়ব
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫২
ইয়ুরােপে তিন বৎসর।