আমি একজন জমিদারের সহিত তদীয় গ্রাম্য আবাসে কয়েক দিবস যাপন করিয়াছিলাম। এবম্বিধ স্থান নিতান্তই দর্শনোপযুক্ত। পরিষ্কার ও সুগঠন গৃহ, পরিসর বারাণ্ডা ও নিকটস্থ সুন্দর উপবন ও ক্ষেত্র, সুন্দর সরোবর ও সুশীতল ছায়াতম নিবিড় বিপিন, দুরশৈলমালাবেষ্টিত অবিচ্ছিন্ন দর্শন, পাদপাচ্ছাদিত পথ, ও হরিণ-যূথালঙ্কৃত বিস্তৃত ক্ষেত্র, সুরভি-বনকুসুম-শোভিত তরুরাজী, সুন্দর কুটার, সুগঠন গির্জা ঘর, এ সকল দেখিতে কেনা অভিলাষী হয়? কিন্তু কেবল ইহাও নহে; পল্লীগ্রামস্থ ইংরাজেরা ভিন্ন ও অভিনব প্রকৃতি অবলম্বন করে। লণ্ডন নগরের সমাজিক কঠিন নিয়মের নিগড় না থাকাতে তাহারা পল্লীগ্রামে স্বাধীন ও স্বেচ্ছানুরূপ ব্যবহার করে, ও পরের সঙ্গে উদার চিত্তে আমোদ প্রমোদ করে। জমীদারদিগকে দীনভাবাপন্ন গ্রামবাসিদিগের সহিত স্বাধীন, এমন কি সপ্রেমভাবে, মিলিত হইতে ও তাহাদিগের গৃহ, ভূমি ও বৎসরের ফলাফল প্রভৃতি নানাবিষয়িণী কথা স্নেহগর্ভ বচনে জিজ্ঞাসা করিতে এবং আপৎকালে ত্রাণার্থে করপ্রসারণ করিতে দেখিলে চিত্ত যথার্থই পুলকিত হয়। গ্রাম্য বালিকারা, ভূস্বামীর কলত্র ও কন্যাগণকে ভক্তিভাবে ভালবাসে এবং তাঁহারাও সদয়ভাবে তাহাদিগের সহিত কথাবার্ত্তা কহেন। অকপট ও সসম্ভ্রম ভক্তি দ্বারা সে আলাপ মধুর করে, এবং সময়ে সময়ে সেই আলাপ সোদরা-স্নেহে পরিণত হইয় উঠে।
এখানকার রবিবার নিতান্তই শান্তিপ্রদ। যে ব্যক্তির কণামাত্র বাৎসল্য গুণ আছে, প্রফুল্লানন ও সুবেশ গ্রাম্য