হয়। আমাদিগের পথ-দর্শকের নিকট একটা রণশিঙ্গা ছিল, সে তাহা বাজাইল, এবং পরে তিনবার তাহার প্রতিশব্দ শ্রবণ-কুহরে প্রবিষ্ট হইল, ও কোন খানে প্রতিধ্বনি শিঙ্গার শব্দাপেক্ষা সমধিক উচ্চ জ্ঞান হইল।
আয়ার্লণ্ডের বিবরণ সমাপন করিবার পূর্ব্বে ইহাকে লোকে কেন হরিদ্বর্ণ বলে, তদ্বিষয়ে কিছু লিখিতেছি। রেলগাড়িযোগে মাঠের মধ্য দিয়া যাইবার সময় কি উত্তর, কি দক্ষিণ, কি পূর্ব্ব, কি পশ্চিম, যে দিকে নেত্রপাত করা যায়, সেই দিকেই নিবিড় শ্যামল ক্ষেত্রচয়, সেই দিকেই ঘন হরিদ্বর্ণ অটবী, সেই দিকেই দূর্ব্বাদলোপম নবোদ্ভূত উদ্ভিদরাশি নয়নকে রঞ্জন করে। অম্বেষণ করিয়া এবম্প্রকার শোভা ইংলণ্ডে দেখিতে পাওয়া যায় না।
আয়ার্লণ্ডদেশীয় দুঃখী লোকদিগের গোল আলু একমাত্র জীবনোপায়; এবং ইহারা প্রায় কখনই কোন প্রকার মাংসাহারের সুখ সম্ভোগ করিতে পায় না। এখানে যে অসীম গোল আলুর ক্ষেত্র সমস্ত আছে, তাহা দেখিলে চমৎকৃত হইতে হয়। এখানকার পল্লীগ্রামবাসী লোকেরা নিতান্তই দুঃখী। স্বামী স্ত্রী ও সন্তানগণ গণিতে অনেকগুলি; কি রৌদ্র, কি বৃষ্টি সকল সময়েই একত্রে ক্ষেত্রে কার্য্য করে ও রাত্রিতে একখান অতীব জঘন্য কুটীর মধ্যে শূকর ও হংসসহ শয়ন করিয়া থাকে। উর্ব্বর দেশের কৃষকগণ যে অত্যন্ত নিঃস্ব ও নিরন্ন, আয়ার্লণ্ড তাহার একমাত্র দৃষ্টান্ত স্থল নহে। আমি আয়ার্লণ্ড সম্বন্ধে একটা কবিতা লিখিয়াছি, তাহা আপনাকে প্রেরণ করিতেছি।