পাষাণ শয্যা ত্যাগ করে উঠে বস্ল। তারপর কল্পশেখরের দিকে তাকিয়ে দেখ্ল!
কল্পশেখর কর্কশকণ্ঠে জিজ্ঞেস করল-“কে তুমি?”
“আমি তরুণী।”
কল্পশেখর পাগলের মতো হেসে উঠ্ল। সে হাসি আশে পাশে পাহাড়ে পাহাড়ে প্রতিহত হ’য়ে কোন এক প্রেতলোকের বিকট বীভৎস শব্দের মতো প্রতিধ্বনিত হয়ে উঠ্ল। চীৎকার করে’ নিশির সঙ্গিনীর মুখমণ্ডলের দিকে দেখিয়ে দিয়ে ঘৃণার স্বরে বলে ঊঠ্ল—তুমি—তুমি তরুণী—ওই লোল চর্ম্ম, বিরল দন্ত, মুখের উপরে শুক্নো চামড়ার মতো দুখানা ঠোঁট—দীপ্তিহীন কোটরগত ঐ দুটি চোখ মাথায় কাশফুলের মতো সাদা একরাশ চুল—তুমি—তুমি—তরুণী!”
জরাগ্রস্ত রমণী করুণ বিষাদের হাসি হেসে ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়াল তারপর কল্পশেখরের কাছে এসে তার হাতখানি ধরে’ তাকে হ্রদের তীরে জলের কিনারে নিয়ে গেল। তারপর আপনার কৃশ হস্তের শুষ্ক অঙ্গুলি বিস্তার করে জলের দিকে দেখিয়ে দিয়ে বল্লে “দেখ।” কল্পশেখর দেখ্ল।
কল্পশেখর দেখ্ল হ্রদের জলে আপনার প্রতিবিম্ব। পেশীহীন গণ্ডদ্বয়ে রসহীন চামড়া ঝুল্ছে—সাদা ভূরুর নীচে কোটরগত দুটি চক্ষু কুয়াসায় ঢেকে গেছে—মসৃণ ললাটে করাল কাল তার নিষ্ঠুর দাঁত বসিয়েছে—আর মাথার ওপরে বরফের চাইতেও সাদা একরাশ
৬১