পাতা:ইসলামী ধর্মতত্ত্বঃ এবার ঘরে ফেরার পালা.pdf/৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 সুলতান হোসেন শাহ হিন্দুদিগের প্রতি উদারতার জন্য বর্তমানকালে প্রসিদ্ধি লাভ করিয়াছেন। কিন্তু তাহার কালেই নবদ্বীপে উল্লিখিত কাজীর অত্যাচার হইয়াছিল।

যারে পাইল কাজী মারিল তাহারে।
ভাঙ্গিল মৃদঙ্গ অনাচার কৈল দ্বারে।
কাজী বলে হিন্দুয়ানি হইল নদীয়া।
করিব ইহার শাস্তি নাগালি পাইয়া॥
যাহার মাথায় দেখে তুলসীর পাত।
হাতে গলে বান্ধি নেয় কাজীর সাক্ষাৎ।
বৃক্ষতলে থুইয়া মারে বজ্র কিল।
পাথরের প্রমাণ যেন ঝড়ে পড়ে শিল॥
ব্রাহ্মণ পাইলে লাগে পরম কৌতুকে।
কার পৈতা ছিড়ি ফেলে থুতু দেয়া মুখে॥
হারামজাত হিন্দুর এত বড় প্রাণ।
আমার গ্রামেতে বেঁটা করে হিন্দুয়ান॥
গোটেগোটে ধরিব গিয়া যতেক ছেমরা।
এড়া রুটি খাওয়াইয়া করিব জাতি মারা॥

 যশোরাজ খান নামক কবিতাহাকে জগৎ ভূষণ’ এবংকবীন্দ্র পরমেশ্বর তাহাকে “কলিযুগের কৃষ্ণ” বলিয়া উল্লেখ করিয়াছেন। ইহা হোসেন শাহের স্বরূপ বর্ণনা মনে না করিয়া মধ্যযুগের বাঙ্গালী কবির দীর্ঘ দাসত্বজনিত নৈতিক অধঃপতনের পরিচায়ক বলিয়া গ্রহণ করাই অধিকতর সত।

 নবাব মীরজাফরের মৃত্যুশয্যায় নাকি তাহাকে কিরীটেশ্বরী দেবীর চরণামৃত পান করানো হইয়াছিল। এই ঘটনাটিও হিন্দু-মুসলমানের মিলনচিহ্নস্বরূপ ব্যাখ্যাত হইয়াছে। বাঁচিয়া উঠিলে হয়ত তিনি ঐ দেবীর মন্দিরটিই ধ্বংস করিতেন। তাহার অনতিকাল পূর্বে নবাব মুর্শীদকুলী থান উহার নিকটবর্তী অনেক মন্দির ভাঙ্গিয়া মসজিদ নির্মাণ করিয়াছিলেন। আরইহাও বিশেষভাবে স্মরণ রাখিতে হইবে যে শ্রীচৈতন্যদেব দীক্ষার পরে চব্বিশ বৎসর (১৫১০৩৩ খ্রীঃ) জীবিত ছিলেন ইহার মধ্যে সর্বসাকুল্যে পুরা একটি বছরও তিনি হোসেন শাহী রাজ্য অর্থাৎ বাংলাদেশে কাটান নাই। তাহার পরম ভক্তও হোসেন শাহের পরমশ উড়িষ্যার পরাক্রান্ত স্বাধীন রাজা প্রতাপরুদ্রের আশ্রয়েই তিনি অবশিষ্ট জীবনের বেশিরভাগ সময় কাটাইয়াছেন।

শ্রীরমেশচন্দ্র মজুমদার, প্রণীত বাংলাদেশের ইতিহাস
(২য় খণ্ড) ১৩শ পরিচ্ছেদ, ৬ষ্ঠ অনুচ্ছেদ।

"The murder of infidels (Kafir-kushi) is counted a merit in a Muslim. It is not necessary that he should tame his own passions or mortify his flesh, it is not necessary for him to grow a rich growth of spirituality. He has only to slay a certain class of is fellow beings or plunder their lands and wealth and this act in itself would raise his soul to heaven. A religion whose followers are taught to regard robbery and murder as religious duty, is incompatible with the progress of mankind or with the peace of the world."

Sir Jadu Nath Sarkar, History of Anringzib, Vol. III