ইস্তাহার
পৃথিবীর নানা প্রান্তে শোষণের ভয়ঙ্কর ছবি
দেখে, আজ আমি এক বিদ্রোহী বিপ্লবী কবি,
আমার বুকের রক্তে লিখি লাল লাল ইস্তাহার।
দুর্ভিক্ষে যুদ্ধে রোগে অনশনে মানি নি তো হার,
মিছিলের পুরোভাগে করি আজ জেহাদ ঘোষণা,
আমি তো জানি না, বন্ধু, নত শির কাতর প্রার্থনা৷
যে সকল বজ্র মুঠি কেড়ে নিয়ে অন্ন বারবার
দুর্বলের ভগ্ন প্রাণে জাগায় ক্ষুধার হাহাকার,
আমার এ মেরুদণ্ডে উষ্ণ রক্তে অশান্ত প্রবাহ
সেই লোভী জিহ্বাকে জিঘাংসায় করবেই দাহ।
দেয়ালে দেয়ালে লেখা আমার জ্বলন্ত ইস্তাহার।
সাক্ষ্য দেবে অন্যায়ের ইতিহাসে। ঘৃণ্য অত্যাচার,
অবিচার অনশনে নিঃস্ব পঙ্গু দুঃস্থ দিশহারা
নিত্য বঞ্চিতের প্রতি সাত্বনার ধূর্ত ইসারা
তাহাদের প্রলুব্ধ করে, যারা ক্লীব মুর্খ পদানত।
যুগে যুগে অপদস্থ, অপমানে অতি মর্মাহত;
আমি কভু সেই দলে লিখি না তো পাগলের নাম,
তাদের বেদনা দুঃখ বঞ্চনা, আমি জানতাম!
আমি লিখি ইস্তাহারে শুধু তাহাদেরই সব কথা,
যাদের চায় না কেউ, যাদের জীবনে ব্যর্থতা;
সেই সব প্রতিহিংসাপরায়ণ ক্ষুব্ধ কঙ্কাল
আপন অস্থি দিয়ে ভাবীকালে জ্বালবে মশাল।