পাতা:ঈশানী (প্রথম সংস্করণ) - জলধর সেন.pdf/১৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আর নেই বাবা। একটা কাজ কর, ওঁর পায়ের ধূলো এনে আমার মাথায় দেও। আমার যে উঠবার শক্তি নেই।” লক্ষ্মী তাহাই করিল। বড় গিল্পী একটা শান্তির নিঃশ্বাস ফেলিয়া বলিলেন, “আঃ! শরীর জুড়িয়ে গেল;-রোগ ত আর নেই মা !” রমেশের দিকে চাহিয়া বলিলেন “বাবা রমেশ, আবার বলছি, আমার কাছে প্ৰতিজ্ঞা কর বাবা, লক্ষ্মীকে তুমি দেখবো। ওর কথা ত তোমাকে কিছুই বলতে পারলাম না। বড় পোড়া কপাল ওর বাবা ! তুমি ওকে ঘৃণা কোরো না । মেয়ে আমার সতীলক্ষ্মী । ওকে আশ্রয় দিও বাপ। লক্ষ্মী, একটু সরে বোসে মা ! ওঁকে একবার ভাল করে দেখতে দাও—একবার শেষ দেখা দেখে নেই। রমেশ, লক্ষ্মীকে তোমার হাতে-” আর কথা বাহির হইল না ; দুইটা দীর্ঘশ্বাস টানিয়া সতীশিরোমণি স্বামীর দিকে চাহিয়া চিরদিনের জন্য নীরব হইলেন । লক্ষ্মী এতক্ষণ ও ধৈৰ্য্য ধরিয়া ছিল ; এখন আর চুপ করিয়া থাকিতে পারিল না। ;-“মা, মাগে৷” বলিয়া মায়ের বুকের উপর আছাড়িয়া পড়িল । তাহার। চীৎকারে বড় কৰ্ত্তার সংজ্ঞা ফিরিয়া আসিল । তিনি গৃহিণীর দিকে চাহিয়াই ছিলেন ; কিন্তু কিছুই এতক্ষণ বুঝিতে পারেন নাই। এখন বুঝিতে পারিলেন, সব শেষ হইয়া গিয়াছে। তখন অতি ক্ষীণ, অতি কাতর স্বরে বলিলেন “গিল্পী, আগেই গেলে । যাও-আমিও আসছি— এখনই আসছি। ভাই হরেকৃষ্ণ ! ভাই রে!” by