পাতা:উচ্চ জীবন.pdf/৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ভূমিকা

 বাংলা গদ্য সাহিত্যের ইতিহাসে মোহাম্মদ লুৎফর রহমান নিঃসন্দেহে কীর্তিমান পুরুষ! বিশ শতকের গোড়াতে তাঁর সাহিত্য-জীবন শুরু হয় ‘প্রকাশ’ কবিতা পুস্তকের মাধ্যমে। বলা বাহুল্য এটি তাঁর প্রথম ও শেষ কবিতা গ্রন্থ রচনা। পরবর্তী জীবনে তিনি প্রবন্ধকার হিসাবেই পরিচিত হন। মীর মোশারফ হোসেন, মোজাম্মেল হক, লুৎফর রহমান এ তিন জনকে বাংলা গদ্যে প্রথম শ্রেণীর মুসলমান গদ্য লেখক বলে গণ্য করা যায়। শুধু মুসলিম গদ্য লেখক হিসাবে নয়, বাংলা গদ্য লেখকদের মধ্যেও এই তিন জন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

 “মানুষের জন্য অপরিসীম দরদ ও বেদনা-বোধ আধুনিক কালের বাঙালী সাহিত্যিকদের বিশিষ্ট করে তুলেছে। ঊনবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধ থেকেই বাংলার সাহিত্যে মানুষ তার স্বকীয় মহিমায় ও স্বাতন্ত্রে প্রতিষ্ঠিত হলো। পশ্চিমের ব্যক্তি জাগরণের প্লাবন বাংলার মাটিকেও সিক্ত করতে ছাড়লো না। বাংলার মধ্যযুগের সাহিত্যে দেবতা ও সামন্ততন্ত্রের হাতে সাধারণ মানুষের যে লাঞ্ছনা হয়েছে এবং তার ব্যক্তিত্বকে যে ভাবে অস্বীকার করা হয়েছে, একালের সাহিত্য তাঁরই বিরুদ্ধে বিদ্রোহ। এ বিদ্রোহের সূত্রপাত করেছিলেন কাব্যে মধুসূদন এবং বিহারীলাল আর প্রবন্ধ ও গল্প উপন্যাসাদিতে বিদ্যাসাগর এবং বঙ্কিম প্রমুখ মনীষীরা। মানবতার এ আদর্শই রবীন্দ্রনাথ ও শরৎচন্দ্রের হাতে বাংলা সাহিত্যে উজ্জ্বল এবং সুস্পষ্ট রূপ লাভ করেছে। ডাক্তার মোহাম্মদ লুৎফর রহমানও মানুষের এ ব্যক্তি জাগরণ ও মানবতা-মন্ত্রেরই সাধক।

 “লুৎফর রহমানের 'Humanism' বোধে ও তার সাধনায় তাঁর পূর্বসূরীদের সঙ্গে তুলনায় কিছুটা পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। সে পার্থক্যই সাহিত্য ও সামাজিক জীবনে তাঁর বৈশিষ্ট্যের

এক