পাতা:উচ্চ জীবন.pdf/৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পরিচায়ক। মানবতা বা জাতীয়তার একটা ব্যাপক ও সার্বজনীন রূপ তিনি ধ্যান করেননি। তাঁর আরাধ্য ছিল 'Individual' মানুষ। ব্যক্তি মানুষের মনুষ্যত্ব বিকাশের পথই হলো তাঁর মতে চরিত্র গঠন; আত্মশক্তিতে বিশ্বাস এবং আত্মার উৎকর্ষ সাধন। দয়ামায়া, স্নেহমমতা, পরোপকার প্রভৃতি হৃদয়বৃত্তির চর্চা ও সাধনায় মানুষ লাভ করতে পারে পরিপূর্ণ মনুষ্যত্ব। তিনি ভাবতেন মর্যাদাবান শরীফ সে-ই যে চরিত্রবান; যে সত্যোপসিক, যে জ্ঞানসাধক। লুৎফর রহমান বিশ্বাস করতেন সমাজ-জীবনকে সুন্দর করে রচনা করতে হলে জাতীয় চরিত্রকে উন্নত ও মহীয়ান করে তুলতে হলে ব্যক্তির জীবন আদর্শায়িত করে তুলতে হবে। ব্যক্তি জীবন রচনার এ কাজ সম্ভব হতে পারে জাতি গঠনের ভার যাদের ওপর সেই মায়েদের জাত নারীর জাগরণে; নারীর চিত্তবিকাশ ও আত্মোন্নতির ফলে। তাঁর সমগ্র জীবনের সাধনার প্রারম্ভিক হিসেবে তাই দেখা যায় তিনি সমাজে নারীর নতুন মূল্য নিরূপণ করতে প্রাণপাত পরিশ্রম করেছেন। এ ব্যাপারে একই সঙ্গে তিনি 'Idealist ও realist. আইডিয়ালিস্ট এ জন্যে যে মানুষকে পূর্ণ মনুষ্যত্বে বিকশিত করে তুলবার জন্যে এ-ও তাঁর এক স্বপ্ন-কল্পনা এবং রিয়্যালিস্ট এ জন্যে যে এ উদ্দেশ্যে পৌঁছানোর জন্যে তাঁকে বাস্তব কর্মপন্থা গ্রহণ করতে দেখতে পাচ্ছি। তাঁর ‘নারী শক্তি' বলে পত্রিকা চালানো এবং ‘নারী তীর্থ’ নামক নারী আশ্রম প্রতিষ্ঠা একই সঙ্গে নারী জাগরণে সহায়তা করেছে এবং অগণিত অসহায়া নারীর স্বাধীন জীবিকার্জনের পথ করে দিয়েছে। তিনি এ কালের ‘Knight' উপাধি পেয়েছিলেন, অনেকে তেমনি তাঁকে 'Eecentic' বলতেও ছাড়েননি।” [ বাংলা সাহিত্যের ইতিবৃত্ত: মুহম্মদ আব্দুল হাই ও সৈয়দ আলী আহ্সান ] লুৎফর রহমান যশোহর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন ১৮৮৯ খ্রীস্টাব্দে। পেশায় তিনি হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার ছিলেন। তাঁর মনের আশ্চর্য রকমের উদারতা ও মহৎ প্রাণতা সত্যসত্যই দুই

দুই