পাতা:উত্তরকালের গল্পসংগ্রহ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৪৫০
উত্তরকালের গল্পসংগ্রহ
৪৫০

৪৫০ উত্তরকালোর গল্পগংগ্ৰহ ‘ওই ব্যবসাই করি এবার। আর তো কোন পথ দেখছি না ঝি-গিরি ছাড়া। সাধন নিঃবাস ফেলে বলে, ‘তুমি’মেয়েমান, তায় মেয়ে—তবও তো যা হোক কিছ রোজগার করছপ্রায় তিন বছর চালিয়ে দিলে। আমি খালি লোকসান দিলাম, বাবার টাকাগলি নষ্ট করলাম। সবিতা সখেদে বলে, ‘সত্যি! অ্যাপনার কথা ভাবলে এমন খারাপ লাগে আমার! যা ধরি তাই যেন ফকে যায়: গভীর সমবেদনায় তার হাত চেপে ধরে সবিতা নীরবে তার মধের দিকে চেয়ে থাকে। সাধন তার চোখে তার মনের ছায়া দেখতে পায়। সাধন বলে, হতংশ হয়ে পড়েছি ভাবছ? হতাশা না গো, এ হলো প্রাণের জালা। সে একটা বিড়ি ধরায়। ‘আর একটা গান লিখেছি, শিখবে? 'শিখব না?’ সাধন লেখা গানটি সবিতার হাতে দেয়। মোটা গলায় পদগলির মোটামদুটি সর গেয়ে শোনায়। সবিতা মন দিয়ে শোনে-তারপর সেই পদটি সম্বরে ঝক্কার দিয়ে ওঠে তার গলায়। ভ্রমর এসে চুপ করে দরজার বাইরে বসে। একে একে ছেলে বড়ো মেয়ে পরষ যারা এসে জোটে তাদের সে হাতের মথের নিঃশব ইঙ্গিতে বঝিয়ে দেয় ট শব্দটি করা চলবে না, ইটিগতেই তাদের সে নির্দেশ দেয় চুপ-চাপ বসে পড়ার। গান অভ্যাস করার ফাঁকে সবিতা বলে, ‘এমনি শনলে হবে না, পয়সা লাগবে। রেশন আনার পয়সা নেই। না খেয়ে শকনো গলায় গান খোলে না। বাইরে থেকে অঘোর বলে, ‘পয়সা দিয়ে পচা সিনেমা দেখি, বিনে পয়সায় গান শনেব কেন? চাঁদা অমরা তুলে দিচ্ছি—কিতু গান শেখা শানব শধৰ? শেখা গান দ, একটা হবে না?’ ‘হবে বৈকি?’ দরজার কাছে এগিয়ে এসে সৰ্ববতা পরানো গান ধরে। গতর খাটিয়ে ধান ফলিয়ে জিনিস বানিয়ে মানষের উপোসী থাকার’ গান।