পাতা:উপদেশ (প্রতাপচন্দ্র মজুমদার).djvu/১২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

$ o উপদেশ । শাস্ত্র, সমুদয় তত্ত্ব নিহিত। কথিত আছে, ঋগ্বেদীয় ঋষিগণ ওঁ শব্দ উচ্চারণ করিলেন, উচ্চারণ করিবামাত্র তাঁহাদের শুভ্রকেশ সুবর্ণে মণ্ডিত হইয়া গেল ; মুখ হইতে স্বর্ণরাশি বহির্গত হইতে লাগিল। যেমন আমাদের দেশে শব্দের মাহাত্ম্য এইরূপ কত ভাবে ব্যক্ত হইয়াছে, অন্ত দেশে, খ্ৰীষ্টানদিগের দেশে, গ্রীস দেশে,আফ্রিকার মিসর দেশেও শব্দের মহিমা ঘোষিত হইয়াছে। শব্দের চিন্তাতে মহা মহা পণ্ডিতগণ ধাৰ্ম্মিকগণ মগ্ন ছিলেন । আমাদেরও উচিত হইয়াছে এ বিষয়টা কি, উপলব্ধি করিব। যদি পারি, আমরা শব্দের উপর আমাদের ধৰ্ম্মকে স্থাপন করিব । সমস্ত ধৰ্ম্মশাস্ত্রের নাম ঈশ্বরের শব্দ । কোরাণ কি ? শব্দ । গুরুনানকও অনাহত শব্দের কথা লিথিয় যান। বাস্তবিক শব্দ বিনা ধৰ্ম্ম স্থাপিত হইতে পারে না । যতক্ষণ ন শব্দ ঈশ্বরের মুখ হইতে বিনিঃস্থত হয়, যতক্ষণ না সেই বিস্তৃত পরমাত্মা, সেই আকাশব্যাপী ব্রহ্ম, সেই সৰ্ব্বঘটে বিরাজমান লাবণ্যময়ী শক্তি, সঙ্কুচিত হইয়া, গাঢ় হইয়া শব্দায়মান হয়, ততক্ষণ ঈশ্বর বোধ হয় না, ধৰ্ম্মের গভীরতা বোধ হয় না। সেই জন্য ধৰ্ম্মাকাজী লোক সৰ্ব্বদ শব্দের অনুসরণ করেন। শিখ বলে, গ্রন্থসাহেব প্রভৃতি সকল শাস্ত্রের নাম শব্দ । ভজন নয়, শাস্ত্র নয়, সংগীত নয়, শব্দ। শব্দ কেন নাম হইল ? সেই সকল ছন্দে বন্দে, সেই সকল শব্দে, সেই সকল ভাবে, ঈশ্বরের মহিমা এমনই প্রকাশিত যে, শ্রবণমাত্রই শ্রোতার ধৰ্ম্মবোধ, ব্ৰহ্ম বোধ হয়। অতএব যাহা কিছু ধৰ্ম্ম ও সত্য, যাহা ঈশ্বরের গুণ ও প্রকৃতি, সমুদয়ই শব্দায়মান হয়। কেন হয় ? না শুনিলে ত বিশ্বাস হয় না। বিশ্বাসের উৎপত্তি কোথায় ? কর্ণে শ্ৰবণে। বিশ্বাসী সাধুরা বলিয়া গিয়াছেন, শব্দ শ্রবণে বিশ্বাস হয়। অতএব হে উপস্থিত ভ্রাতৃগণ শ্রব ণের উপর যে ঘৃণা করে না, যে শ্রুতিধর, যে শব্দরূপ বর্ণকে ধরির রাখে,