পাতা:উপদেশ (প্রতাপচন্দ্র মজুমদার).djvu/১৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যুগধৰ্ম্ম-ভাগবত । 4 مات সেই নিদারুণ অবস্থাতেই কিছু দিন চলিয়া গেল। কিন্তু অলঙ্ঘ্য নিয়মের চক্রে ঘুরিতে ঘুরিতে সে অবস্থার অবসান হইল। যখন ভারি রৌদ্র হয়, বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠের প্রখর উত্তাপ প্রান্তরকে শতভাগে ভগ্নকরে, আকাশ তাম্রবৎ ও পৃথিবী লৌহবৎ বোধ হয়, বায়ু কালের নিঃশ্বাসবৎ শরীরকে জালাইতে থাকে, তখন কি মনে হয়, শ্রাবণের গভীর ধারা তাহারই মধ্যে প্রচ্ছন্ন আছে ? কিংবা যখন বর্ষার মুষলধারে জল পড়ে, পৃথিবী জলমগ্ন হয়, নদী বন্যায় ভাসিয়া যায়, গ্রাম জন-শূন্ত হয়, সংসার ধান্ত-শূন্ত হয়, মৃত্যুর চীৎকার উঠতে থাকে, তখন কি মনে হয়, বসন্তের শশী আবার আকাশে উঠিবে ? দক্ষিণ মরুত শান্তির ব্যজন হস্তে লইয়া শ্রাস্তকে শীতল করিৰে ? মনে হয় না ; অথচ যে নিয়মে গ্রীষ্মের পর বর্ষা, সেই নিয়মেই শরৎ, হেমন্ত, শীত ও বসন্ত। যে নিয়মে প্রাণ শুষ্ক ও উপাসনা নীরস হইয়াছিল, অবস্থা শ্মশানের আকার ধরিয়াছিল, সেই নিয়মেই তৎসমুদয় অপূৰ্ব্ব ত্র ধারণ করিল। কলুটোলার সেই যে ত্রিতল গৃহ, তাহ বোধ হয়, অনেকেরই মনে আছে। সেই দুইটা প্রকোষ্ঠ, একটার পর আর একটি ক্ষুদ্র স্বর, যাহার স্মৃতি জলেও ধৌত হয় না এবং আগুনেও পুড়িয়া যায় না। সেইখানে শুষ্ক উপাসনার স্বরের ভিতরে অপূৰ্ব্ব সংগীত শুনা গেল। কোন দিব্য মুহূৰ্ত্তে বলিতে পারি না, কিন্তু কঠিন অবস্থার ভিতরে স্বৰ্গ হইতে নারদের বীণা বাজিয়া উঠিল। মানুষের কণ্ঠে দেবতার ভাষা আসিল, স্বর্গের বর্ণ তাহার মুখশ্ৰীতে পতিত হইল। ব্রহ্মসমাজে যখন প্রথমে ভক্তি সঞ্চার হয়, তখনকার কথা অতি অপূৰ্ব্ব কথা । যেমন কোন মহাপুরুষ যখন শিশু ছিলেন, সেই শৈশবের কথা আমাদিগের জানিতে ইচ্ছাকরে, তেমনই ভক্তির স্বর্ণময় মন্দিরের দিকে