পাতা:উপদেশ (প্রতাপচন্দ্র মজুমদার).djvu/১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

v - উপদেশ । সংসারের ব্যস্ততার মধ্যে মৃত্যু ও পরকাল এই কথা শুনিয়া লোকে চমকিত হয় । কম্পিত হয় মনুষ্যের হৃদয়, যখন সে মনে করে সেই লোক যেখানে চন্দ্র নাই, স্বৰ্য্য নাই, পিতা মাতা নাই, স্ত্রী পরিবার, স্বজন বন্ধু কেহ নাই ; যেখানে পাপীর বিচার হয়, তুরাত্মাদিগের দণ্ড হয়। সেই অন্ধকারময় অজানিত লোকের কথা শুনিয়া কাহার হৃদয় না তটস্থ হয় ? অদ্যকার তুর্ভাগ্য কল্য যাইতে পারে। অদ্যকার বিচ্ছেদের পর কল্য পুনৰ্ম্মিলন, আদ্যকার অনুন্নতি ও পাপের পর কল্য অনুতাপ, প্রায়শ্চিত্ত । কিন্তু কি হইবে সেই লোকেতে যেখানে কালের পরিবর্তন নাই, জীবনের পরিমাণ নাই, অবস্থার পর্য্যায় নাই। যখন আবার পরলোক, ইহলোক দুই লোকের সঙ্গে প্রভেদ করি, আরও মন চমকিত হয়। পরলোকের পথ কোথায়, কোন দ্বার দিয়া সেখানে প্রবেশ করিতে হয়, কে বলিতে পারে? সেই পথের নাম, দ্বারের নাম ভয়ানক। তাহার নাম মৃত্যু। মৃত্যুর নাম উচ্চারণ করিলে উল্লাসের অগ্নি নিৰ্ব্বাণ হইয়া যায়, বিষয়-লালসার উচ্চ মস্তক ধূলিতে অবনত হয়। “অশ্রু পড়ে বাসনার, দম্ভ করে হাহাকার, মৃত্যুর স্মরণে র্কাপে কাম, ক্রোধ রিপুগণ ।” মৃত্যুর নামে জগত অবসন্ন ; পণ্ডিত ভয়ে সঙ্কুচিত, মূৰ্খ ভয়ে বিহ্বল, ধনী দরিদ্র, রাজা প্রজ, নরনারী সকলেই বিশুষ্ক-বদন । এই যে মৃত্যু, ইহা পরলোক যাইবার সোপান। অন্ধকারের পর অন্ধকার বৃদ্ধি হইল, ভয়ের উপর ভয় । কোথা সেই পরলোক, তাহার সহিত আবার মৃত্যুর ক্লেশ। এমন সুন্দর শরীর যাহাকে এত বস্ত্র অলঙ্কারে সুশোভিত করিলাম, তাহ অগ্নিদীত্বে ভস্মসাৎ হইতে চলিল। সেই শরীর শবে পরিণত হইয়া বিকৃত আকারে জঘন্ত শয্যাতে, শ্মশানে শয়ন করিল। ধনীর সুন্দর তনু দীনের কুৎসিত দেহের সঙ্গে একত্রে শয়ন করিয়াছে। হে মনুষ্য, কোথায় তোমার জীবনের