পাতা:উপদেশ (প্রতাপচন্দ্র মজুমদার).djvu/১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

So উপদেশ । না। একজন পাপীর জীবন আলোচনা কর, একজন সরল পাপীকে জিজ্ঞাসা কর দেখি, তাহার হৃদয়ের কি অবস্থা ? কি উত্তর পাইবে ? : সে বলিবে, পরলোকের যে যন্ত্রণায় ভয় করিয়াছিলাম, ইহলোকেই তাহার আরম্ভ হইয়াছে। আমার শরীর বিকৃত, আমার স্বাস্থ্য ভগ্ন, কত শ্রান্তি কষ্ট আমার জীবন বহন করিতেছে। দুষ্কৰ্ম্ম করিয়া যে ধন উপার্জন করিয়াছি, তাহাতে কি আমার শান্তি হয় ? পরিবারের মিষ্ট কথাতে, আত্মীয়দিগের যত্নে কি আমার হৃদয় মুগ্ধ হয় ? আমি কোথাও আরাম পাই না । এইরূপে জীবন থাকিতে থাকিতে আমার অন্তরে পরলোকের মন্ত্রণ আরম্ভ হইয়াছে, পৃথিবী মধ্যে নরকের শাস্তি মনুষ্যের দেহ মনকে ক্ষত বিক্ষত করিতেছে । কিন্তু যখন শরীর বিনষ্ট হইবে, আত্মা যখন শরীরবিহীন হইয়া পরমেশ্বরের সম্মুখে দাড়াইবে, পাপ প্রবৃত্তি থাকিবে, পাপের জঘন্ত ভাব, চিন্তাও স্মরণ থাকিবে ; কিন্তু পাপ চরিতার্থ করিবার ক্ষমতা থাকিবে না, তৎপরিবর্তে অনুতাপ গ্লানি ও অসহায়তা কেবল হৃদয়কে দগ্ধ করিবে। তখনকার কি শোচনীয় অবস্থা ! পুণ্যবানের প্রতিও এই প্রকার উক্তি। পুণ্যবান ইহলোক মধ্যে পরলোকের আত্মপ্রসাদ লাভ করেন। তিনি বলেন, স্বর্গেতে দেবতারা যে সুখ সম্ভোগ করেন, আমি এই পৃথিবীতে তাহার আস্বাদন পাইতেছি। এইরূপে ইহলোকের মধ্যে পরলোকের আভাস আমরা লাভ করি। হে ভক্ত, এই যে সুখ দেবপ্রসাদে তোমার ধৰ্ম্মসাধন মধ্যে লাভ করিয়াছ ইহা জীবনের প্রথম, কিন্তু স্বর্গেও ইহার শেষ নাই। এই হৃদয়ের সুখ পরলোকের মুখে পরিণত হয়। যে দয়াময়ের ক্রোড় সম্ভোগ করিয়া তুমি এত শান্তি পাইলে, কত তোমার আনন্দ হইবে, অনিমেষ-নয়নে যখন তাহাকে দেখিতে পাইবে। এখানে ছায়ার স্থায় ঈশ্বরকে উপলব্ধি করি |