পাতা:উপদেশ (প্রতাপচন্দ্র মজুমদার).djvu/৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*)● উপদেশ । জগতের মধ্যে ঈশ্বরের সিংহাসন সন্দর্শন করিয়াছে। তাবৎ বাহ বস্তুতে তাহারা ঈশ্বরের সত্তা ও গুণ অনুভব করিয়াছে। মেঘের গর্জন তাহাদের কৰ্ণে ঈশ্বরের ভীষণ নিনাদকে প্রকাশিত করিয়াছে, পুষ্পের লাবণ্যে তাহারা ঈশ্বরের অঙ্গুলিরচিত কারুকার্য দর্শন করিয়াছে। এক বস্তুর সহিত অন্য বস্তুর সম্বন্ধ মধ্যে এবং তাবৎ পদার্থের সুচারু শৃঙ্খলার মধ্যে তাহার জাগ্ৰত ঈশ্বরকে দর্শন করিত। ধৰ্ম্মকে পদার্থবিজ্ঞানের সঙ্গে এক করিয়া ফেলিল। যেমন বাহিরের ঘটনাবলীর মধ্যে ঈশ্বরের সিংহাসন প্রতিষ্ঠিত করিল, তেমনই আবার মনের যাবতীয় শক্তির ও গুণের উপরেও ধৰ্ম্মসংস্কারকে আনিয়া ফেলিল এবং পরিশেষে জনসমাজের পরস্পর সম্বন্ধ ও । সাধারণ নিয়মাবলীর মধ্যেও ধৰ্ম্মসংস্কার স্থাপিত করিল। এই সময়েই ধৰ্ম্ম সম্পর্কে নানা মত, নানা পূজা, নানা আচার ব্যবহার শাস্ত্র প্রচলিত হইল। ধৰ্ম্মবিদ্যা সার বিদ্যা, একমাত্র বিদ্যা বলিয়া সকলে ব্যাখ্যা করিল। এই প্রকারে বেদ, বাইবেল, পুরাণ ; যাগ,যজ্ঞ, হোম, পূজা ; ন্যায়, সাংখ্য ; ইন্দ্র । চন্দ্র প্রভৃতির উৎপত্তি হইল। কিছুকাল পরে প্রকৃত বিজ্ঞান সংসারে জন্ম । গ্রহণ করিল। মনুষ্য হুষ্টিশাস্ত্র আলোচনাতে প্রবৃত্ত হইল। এই ভারতবর্ষেই এককালে প্রকৃত বিজ্ঞান ছিল, কিন্তু তাহ ধৰ্ম্মের সঙ্গে মিশ্রিত হইয়া নিজেরই সত্তা হারাইয়াছিল। পৃথিবীর পশ্চিম খণ্ডে বিজ্ঞান জন্মগ্রহণ করিয়া ধৰ্ম্মের দোষ গুণ দেখাইয়া দিতে প্রবৃত্ত হইল। যখন ইউরোপে এইরূপে ধৰ্ম্ম ও বিজ্ঞানে যুদ্ধ হইতেছিল, যখন বিজ্ঞানের আলোক মনুষ্যের ভ্ৰমাত্মক সংস্কার প্রমাণ করিল, সেই বিজ্ঞান আসিয়া পৃথিবীর পূর্ব বিভাগের ধৰ্ম্ম সংস্কার সকলও বিনাশ করিতে লাগিল। পুরাতন ধৰ্ম্মসংস্কারের পরিবর্তে বিজ্ঞান নুতন সংস্কার সকল স্থাপন করিতে লাগিল। বাহ জগৎ হইতে । ধৰ্ম্ম পলায়ন করিল । বিজ্ঞান যখন দেখিল, বাহ জগৎ হইতে ধৰ্ম্ম পলায়ন