পাতা:উপদেশ (প্রতাপচন্দ্র মজুমদার).djvu/৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আদানপ্রদান । - - N○> করিল, তখন মনোজগতেও আপনার রাজ্য বিস্তার করিতে প্রবৃত্ত হইল। বিজ্ঞান মনুষ্যের মন হইতেও ধৰ্ম্মকে বিদূরিত করিতে লাগিল। আত্মার অস্তিত্ব মানিল না, ঈশ্বরকে স্বীকার করিল না, সকল তত্ত্ব বিনাশ করিতে প্রবৃত্ত হইল। তাহার পর জনসমাজে হস্তক্ষেপ করিল। মনুষ্যের যে সকল সম্পর্ক আছে, যাহাকে আমরা নীতিতত্ত্ব বলি, বিজ্ঞান তাহার পুনঃ সংস্কার আরম্ভ করিল । চারিদিকে বিজ্ঞানের জয় দেখিয়া ধৰ্ম্মযাজকেরা ভয়ে নিরাশায় কঁাপিতে কঁাপিতে, আরও দৃঢ়তররূপে আপনাদের শুষ্ক কৰ্ম্ম কাণ্ড লইয়া লোকের মন ভুলাইতে প্রবৃত্ত হইল। এই সমুদয় ভীত লোকদিগের ব্যবহার দেখিয়া ইউরোপখণ্ডের বিজ্ঞানবিৎ পণ্ডিতদিগের সাহস বাড়িতে লাগিল। কিন্তু আমরা ব্রাহ্ম, আমরাও কি বলিব, ধৰ্ম্ম নাই ? জনসমাজে ধৰ্ম্মবল এবং ধৰ্ম্মজীবনের আবস্তকতা নাই ? ব্রাহ্মসমাজের কৰ্ত্তব্য, এই প্রশ্নের উত্তরদান করা। এই অভাব পূর্ণ করিবার জন্ত ভারতবর্ষে ব্রাহ্মধৰ্ম্মের জন্ম। বিজ্ঞানী পণ্ডিতেরা একটি প্রশ্নের উত্তর দান করিতে পারিলেন না ; তাহারা স্বীকার করিলেন, ইহা বিজ্ঞানের অতীত। সেই প্রশ্ন কি ? এ বিশ্বের পশ্চাতে এক প্রাণরূপ মহাসাগর রহিয়াছে, যাহাতে সমুদয় হুষ্টি ভাসিতেছে। এই যে প্রাণরূপ মহাব্যাপার, ইহার মধ্যে ঈশ্বরের নিবাস । মহাভ্রম তাহাদের, যাহারা কেবল জড়ের মধ্যে ঈশ্বরকে দেখে, ইহা হইতেই । পৌত্তলিকতা আসিয়াছে। প্রকৃত ধৰ্ম্ম তাহারা পাইয়াছে, যাহারা এই জড় বিশ্বের অতীতস্থানে প্রণালয়ে সত্যস্বরূপ ঈশ্বরকে দেখিয়াছে। বাহিরেও প্রাণস্বরূপ ঈশ্বর, ভিতরেও এই প্রাণরূপ মহামূৰ্ত্তি। এই প্রাণরূপ মহাচক্রে সমস্ত বিশ্বরাজ্য ঘুরিতেছে। তাহার জগৎ হইতে র্তাহাকে বিদায় করিয়া দেয় কাহার সাধ্য? যতক্ষণ মনের মধ্যে আনন্দ, পবিত্রতা, প্রেম, সদ্ভাব, জ্ঞান এবং ইচ্ছ, ততক্ষণ প্রাণের প্রাণ সেখানে। যেখানে