পাতা:উপদেশ (প্রতাপচন্দ্র মজুমদার).djvu/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪২ উপদেশ । প্রস্থত হইল। তোমার কি সামান্ত অধিকার! কিন্তু একটি স্থানে তোমার অধিকার নাই। সেখানে তোমার নীতি, তোমার নিয়ম স্থাপন করিও না। পরিত্রাণ দিবার ভার ঈশ্বর নিজের হস্তে রাখিয়াছেন। সেখানকার সমুদয় বিষয়ের নিষ্পত্তির ভার তোমার নয়, তাহার। যাহাতে তোমার এবং জগতের পরিত্রাণ হইবে, সেই প্রণালী তুমি জান না। হে পণ্ডিত ! হে ধাৰ্ম্মিক ! মনুষ্যজীবনের মহ খেদ এবং মহা দুঃখ আছে, যাহার সান্তুনা তুমি দিতে পার না । সে শোক দুঃখের সাত্বনা কেবল একজনের হস্তে আছে, যিনি আপনার অস্তিত্বের অহঙ্কার করেন না। তিনি অন্ধকারে থাকেন, যখন দেখেন জীব নিতান্ত নিরাশ এবং ক্ষীণ হইল, তখন আসিয়া তাহাকে দেখা দিয়া আবার অন্তৰ্দ্ধান হন । ধৰ্ম্মজীবনের এই চারিট কঠিন সমস্ত আছে, যাহার মীমাংসা করিতে হে ধাৰ্ম্মিকশ্ৰেষ্ঠ ! তুমি অক্ষম। একদিকে ভয়ানক অরণ্য, আর একদিকে ভয়ানক সমুদ্র, উভয়দিকেই নিশ্চয় মৃত্যু। অরণ্যের হিংস্র জন্তুর হস্তে মরিব না, সমুদ্রে মরিব ? হে নেতা ! হে মনুষ্যদিগের চালক ! হে বিদ্বান শ্রেষ্ঠ, ধাৰ্ম্মিক-শ্রেষ্ঠ ! তুমি আর পথপ্রদর্শন করিতে পারিলে না। তুমি মনে করিয়াছিলে যে, পরিত্রাণ-গঙ্গা নদীকে দক্ষিণ দিকে লইয়া যাইবে, অমুক প্রস্তর এবং অমুক দেশ দিয়া লইয়া যাইবে ; কিন্তু তাহ হইল না। আর একজন আসিয়া অন্ত উপত্যকার মধ্য দিয়া লইয়া গেলেন। তুমিও বিভ্রান্ত, আমিও বিভ্রান্ত, উভয়েই হতবুদ্ধি হইয়া রহিলাম। সেখানে সমুদয় পাণ্ডিত্য, সমুদয় চরিত্রের বল পরাস্ত হইয়া পড়ে, অত্যন্ত বলবান মনুষ্যও শিশুর ন্যায় হয়। সকলেই নিরাশ্রয় হইয়া, পথভ্রান্ত হইয়া কেবল একজনের দিকে তাকাইয়া থাকে। এইরূপে যাহারা তাকাইতে জানে, তাহারা ধন্ত। আর যাহারা জানে না, তাহারাও ধাৰ্ম্মিক বটে ;