পাতা:উপদেশ (প্রতাপচন্দ্র মজুমদার).djvu/৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8৩ - উপদেশ । স্থৰ্য্য নাই ; কিন্তু যাই স্থৰ্য্য অস্ত হইল, আকাশে কত স্থৰ্য্য, কত চন্দ্র প্রকাশিত হইতে লাগিল। অন্ধকার না আসিলে এত পৃথিবীর সমাচার আনিত কে ? সহস্ৰ পৃথিবীর সমাচার আনিয়া দিল এই অন্ধকার। সামান্ত চিন্তায় দেখা গেল, আলোক ঢাকিয়া রাখে, অন্ধকার দেখায় । বাহিরের অন্ধকার যদি সহস্ৰ সহস্ৰ পৃথিবী প্রকাশ করে, অন্তরের অন্ধকার আরও অধিক প্রকাশ করে। যতক্ষণ ধন, মান, বিদ্যা এবং সুখ ভোগের লালসারূপ আলোক জলিতে থাকে, ততক্ষণ তাহারা লুক্কায়িত থাকে। যে অন্তরে বিদ্যার গৰ্ব্ব জলিতেছে, সে মনে করে বিদ্যার আলোক ভিন্ন আর কি কোন জ্যোতি আছে ? এই বলিয়া আলোকে অহঙ্কারে ডুবিয়া থাকে। আর দুই চার জন লোক, র্যাহাদের উপর স্বৰ্গীয় কৃপা প্রকাশ হইয়াছে, তাহারা বাহিরের চাকচিক্য দেখিয়া শ্রান্ত হন, এবং সকল প্রকার সাংসারিক আলোক দূর করিয়া দিতে চেষ্টা করেন। তাহারা ভয়ানক ঘোরান্ধকার মধ্যে প্রবেশ করিতে ভাল বাসেন । এবং যখনই সেই অন্ধকারের ভিতরে প্রবেশ করেন, অমনই র্তাহার গভীর জীবনাকাশে প্রথমে একটি নক্ষত্র, ক্রমে দশটি নক্ষত্র, পরে শত সহস্ৰ নক্ষত্র প্রকাশিত হইয়া, তাহাকে অপরূপ ব্যাপার সকল প্রদর্শন করে । মনুষ্যের অসার বাসনার জ্যোতি তাহাকে অন্ধ করিয়া রাখে, সেই আলোক কি গভীর জ্যোতিকে ঢাকিয়া রাখে । অতএব এই অন্ধকার ক্ষেত্রে দাড়াইয়া অপরূপ জ্যোতি সম্ভোগ কর । উচ্চ হইতে উচ্চতর স্থৰ্য্য দর্শন কর । এই অন্তঃকরণের ভিতরে অপরূপ ব্যাপার আবিষ্কৃত হইল। কে দেখাইবে ? ঈশ্বরের কৃপা আসিয়া অবতীর্ণ হইল। দিব্য জ্ঞান আসিয়া তাহার হস্ত ধরিল। আলোক র্যাহার প্রকাশের সহস্র ভাগের একভাগও নহে, তিনি অন্ধকারের মধ্যে এই চমৎকার ব্যাপারের অর্থ বুঝাইয়া দিতে লাগিলেন।