পাতা:উপনিষৎ গ্রন্থাবলী - প্রথম ভাগ.djvu/১৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কঠোপনিষৎ רסאל ভস্মীভূত করিয়া ফেলে সেইরূপ অতিথি আসন পাস্যাদির দ্বারা সমাদৃত ন হইলে গৃহস্থের অমঙ্গল হয়। ॥৬ রহস্তবোধিণী—বৈদিক সাধনার উদেশ্ব হইতেছে স্থূলদেহ, ইন্দ্রিয় ও অন্ত:করণের পরিচ্ছিন্নতা দূরীকরণ । আমরা প্রতিদিন ক্রমে ক্রমে তিন অবস্থায় থাকিয়া স্থল স্বল্প কারণ দেহের সহিত আমাদিগকে একীভূত করিয়া ফেলি এবং দেহত্রয়ের ন্যায় পরিচ্ছিন্ন হইয়া উহাদের ধর্মসমূহ নিজেতে আরোপিত করিয়া মুখী, দুঃখী, শোকতাপগ্রন্থ মরণশীল মনুষ্ক বলিয়া নিজেকে মনে করি। প্রত্যেক মানুষ যেমন তাহার স্থল শরীরে অহং বুদ্ধি করে এবং স্থল দেহের সহিত একীভূত হইয়া আমিই স্থল দেহ বলিয়া নিজেকে অতুভব করে, সেইরূপ যখন সে বিবেক বৈরাগ্যবান শ্রদ্ধাভক্তির সহিত আত্মস্বরূপ জানিবার জন্য ঐকাস্তিক আগ্রচাম্বিত হইয় উঠে তখন তাহার আত্মস্বরূপের প্রথম অনুভূতি বৈশ্বানর বা বিরাট পদ লাভ । সমষ্টি স্থল প্রপঞ্চই তাহার দেহ এইরূপ জ্ঞান হয় তাহার স্থল বাটদেহের অভিমান, পরিচ্ছিন্ন ভাব দূর হইয়া যায় ; তখন সে অনুভব করে যে তরঙ্গে জলের ন্যায়; সুবর্ণহারে সুবর্ণের স্কায় সে সমস্ত স্থল জগৎব্যাপিয়া রহিয়াছে ; সমস্ত স্থল জগৎ তাহারই অঙ্গীভূত, তাহাকে ছাড়িয়া স্থল জগতের কোন পৃথক বাস্তব সত্তা নাই । সেই সাধক তখন বৈশ্বানর বা বিরাট বা বিষ্ণু হইয়া যান। সাধন-জগতে সাক্ষাৎকার বা বিরাট পদ লাভ বা ‘জানা’ মানে “হওয়া । দ্বিতীয় স্তরে এই বিরাট পুরুষ সাধকেরই অপঞ্চাকৃত পঞ্চমহাভূত এবং তাহাদের কার্য্যাত্মক সমষ্টি সূক্ষ্ম প্রপঞ্চই আমার দেহ, আমিই স্থল স্বল্প সমুদয় জগৎ ব্যাপিয়া রহিয়াছি, স্থল স্বল্প সমুদয় জগৎ আমারই অঙ্গীভূত, তদতিরিক্ত এই জগতের কোন বাস্তব সত্তা নাই, আমিই হিরণ্যগৰ্ভ বা ব্ৰহ্মা এইরূপ অপরোক্ষামুভূতি হইয়া থাকে। তৃতীয় কুরে স্থল স্বল্প জগৎ প্রপঞ্চে পরিচ্ছিন্ন অহং বুদ্ধি থাকে না, চিত্ত তখন অখণ্ডা, চৈতন্যময়ী, আনন্দময়ী অব্যাকৃত শক্তিরূপ ধারণ করে ।