পাতা:উপবাস - যদুনাথ মজুমদার.pdf/৬

উইকিসংকলন থেকে
পরিভ্রমণে চলুন অনুসন্ধানে চলুন
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
উপবাস।

এবং তজ্জনিত বায়ু-পিত্ত-কফের বৈষম্য রূপ দোষ জন্মে, উপবাসে সেই রসের বিকৃতিরূপ দোষের পরিপাক বা প্রকৃতিস্থতা হয়। উপবাস জরনাশক, জঠরাগ্নির উদ্দীপক, কার্য্যে আগ্রহ ও উৎসাহ-জনক। উপবাসে আহারে রুচি বৰ্দ্ধিত হয়, আহার্য্যের আস্বাদ মধুরতার বোধ হয়, শরীর লঘু—অর্থাৎ ‘খট্‌খটে—ঝর্‌ঝরে’ হয় এবং উহা ‘প্রাণদ’ অর্থাৎ জীবনীশক্তির বর্দ্ধক। নিশ্চয় জানিবেন, সিদ্ধর্ষি আয়ুর্ব্বেদাচার্য্যগণের এই উপবাস-গুণ-বর্ণনে একটুও অত্যুক্তি নাই। যদি ভগবানে বিশ্বাস থাকে, তবে উপবাসের দিন নিজের প্রীতি অনুসারে, যে ভাবে হউক্‌ তাহার উপাসন করিবে। ইহাতে ‘সোণায় সোহাগা’ দেওয়া হইবে। তুমি যদি সুস্থ থাক, তাহা হইলে আরও সুস্থ হইবে; যদি রোগযুক্ত থাক, তবে রোগমুক্ত হইবে। তুমি যে কোন কঠিন রোগেই আক্রান্ত থাক না, দেখিবে, উহার অনেক উপশম হইয়াছে। ক্রমে সপ্তাহে এইরূপ দুইবার উপবাস করিবে এবং পরিবারস্থ সকলকে উপবাস করাইবে। ইহাতে ডাক্তারের খরচ প্রায় বাঁচিয়া যাইবে; সেটাও কম লাভ নয়। এতদ্ব্যতীত প্রতি মাসে একতৃতীয়াংশ ‘খাইখরচ’ বাঁচিয়া গেল। এর সঙ্গে অমাবস্যা, পূর্ণিমা, একাদশী যোগ দিলে, আরও ৪ দিনের খরচ বাঁচিয়া গেল। তবে অনেক সময় রবিবারে ঐ সকল পর্ব্বদিন পড়িতে পারে। যাহা হউক্‌, শরীরের কিছুমাত্র অনিষ্ট নাই, অনেক ইষ্ট আছে, এমত স্থলে এই দারিদ্র্য-পীড়িত দেশে মহোপক রী উপবাসের ফলে অর্থের উদ্বৃত্তি কখনই অবাঞ্ছনীয় নহে।