পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/১৯৪

উইকিসংকলন থেকে
পরিভ্রমণে চলুন অনুসন্ধানে চলুন
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করার সময় সমস্যা ছিল।

১৯৪

উপেন্দ্রকিশাের রচনাসমগ্র

রাক্ষস বক্তবমি করিতে করিতে মরিয়া গেল

ক্ষমতাও অসাধারণ৷ দেখিয়া দ্রুপদ মনে করিলেন যে, ‘ইহাঁদিগকে সন্তুষ্ট করিতে পারিলে আমার কাজ হইবে৷’ দ্রুপদ অনেক কষ্টে যাজ ও উপযাজকে পাঞ্চাল দেশে আনিয়া পুত্রেষ্টি যজ্ঞ আরম্ভ করেন৷ মুনি বলিলেন, “এই যজ্ঞে তোমার পুত্রও হইবে এবং কন্যাও হইবে৷”

 এই বলিয়া অগ্নিতে ঘৃত ঢালিবামাত্রই তাহার ভিতর হইতে, আশ্চর্য মুকুট আর বর্ম পরা পরম সুন্দর এক কুমার ঝক্‌ঝকে রথে চড়িয়া গর্জন করিতে করিতে বাহির হইযা আসিল, তাহার হাতে ধনুর্বাণ আর ঢাল তলোয়ার৷ তখন আকাশ হইতে দেবতারা বলিলেন, “এই রাজপুত্র দ্রোণকে মারিবে৷”

 এদিকে আবার যজ্ঞের বেদী হইতে এক কন্যা উঠিয়া আসিয়াছেন৷ তাঁহার শরীরের রঙ কালো, কিন্তু এমন অপরূপ সুন্দর কন্যা কেহ কখনো দেখে নাই৷ কালো কোঁকড়ানো চুল, পদ্মফুলের পাপড়ির মতো সুন্দর উজ্জ্বল দুটি চক্ষু, ভ্রূ দুটি যেন তুলি দিয়া আঁকা৷ শরীরের সদ্যফোটা পদ্মের গন্ধে, এক ক্রোশ পর্যন্ত ছাইয়া গিয়াছে৷ দেবতা ছাড়া মানুষ কখনো এমন সুন্দর হয় না৷ কন্যা জন্মিবামাত্র আকাশ হইতে দেবতারা বলিলেন, “এই কন্যা কৌরবদিগের ভয়ের কারণ হইবে৷”

 ছেলেটির নাম ধৃষ্টদ্যুম্ন আর মেয়েটির নাম কৃষ্ণা, রাখা হইল৷ কৃষ্ণাকে লোকে দ্রৌপদী অথাৎ দ্রুপদের কন্যা বলিয়াই বেশি ডাকিত৷ এই দ্রৌপদীর স্বয়ম্বরের কথা শুনিয়া, পান্ডবদিগের তাহা দেখিতে যাইবার ইচ্ছা হইল৷ তাহা দেখিয়া কুন্তী বলিলেন, “চল বাবা আমরা সেইখানে যাই৷ এখানে আমরা অনেকদিন রহিয়াছি৷ বেশিদিন এক জায়গায় থাকা ভালো নহে৷” সুতরাং স্থির হইল, তাঁহারা সেই ব্রাহ্মণের নিকট বিদায় লইয়া মায়ের সঙ্গে পাঞ্চাল যাত্রা করিলেন৷

 গঙ্গার ধারে সোমাশ্রয়ায়ণ নামে এক তীর্থ আছে সেখানে আসিয়া পান্ডবদিগের রাত্রি হইল৷ তখন পথ দেখাইবার জন্য অর্জুন মশাল হাতে আগে আগে চলিলেন৷

 সেখানে এক গন্ধর্ব সপরিবারে স্নান করিতেছিল৷ সে পান্ডবদিগকে ধমকাইয়া বলিল,