পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/২৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৩৬
উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র

 দুর্যোধন বলিলেন ‘আপনি যদি দয়া করিয়া একটিবার দ্রৌপদীর খাওয়া শেষ হইবার পব, আপনার এই দশহাজাব শিষ্য লইযা পাণ্ডবদিগের আশ্রমে আহাব কবিতে যান, তবেই আমার ঢেব হয়, আমি আর কিছু চাহি না৷’

 দুর্বাশা বলিলেন ‘আচ্ছা, আমি অবশ্য যাইব৷’

 এই বলিযা দুর্বাশা চলিযা গেলেন আব দুর্যোধনও এই ভাবিয়া বড়ই আনন্দিত হইলেন যে, ‘দ্রৌপদীব খাওয়া শেষ হইলে আর পাণ্ডবেরা দুর্বাশাকে খাইতে দিতে পাবিবে না, সুতং মুনি ৩াঁহাদিগকে শাপ দিযা ভস্ম কবিবেন৷’

 ইহাব পব একদিন সত্যসত্য দুবাশা গিয়া গণ্ডবদিগেব আশ্রমে উপস্থিত হইযাছেন। তখন দ্রৌপদীব খাওয়া শেষ হইয়া গিয়াছে, থালায আব খাবাব নাই। সে যাত্রা কৃষ্ণ পাণ্ডবদিগকে বক্ষা ন করিলে তাহাদের বড়ই বিপদ হইত। একজনেবও ভাত নাই, অথচ দশহাজাব শিষ্য লইয়া মুনি উপস্থিত। এখন উপায়? যুধিষ্ঠিব তাঁহাদিগকে স্নান-আহ্নিক কৰিবাব জণ গঙ্গায় পাঠ'ইয়া দিলে অব দ্রৗপদী মাথায় হাত দিয়া ভাবিতে লাগিলেন, ‘হায় হায়’ স্নান কবিয়া আসিলে ইহাদিগকে কি খাওযাইব?

 উপায় না দেখিয়া দ্রৌপদী মনে মনে কৃষ্ণকে ডাকিলেন। কৃষ্ণ সাধারণ মানুষ নহে, তিনি দেবতা, কাজেই দ্রৌপদীর দুঃখের কথা জানিতে পারি সেই মুহূতেই উপস্থিত হইলেন। কৃষ্ণ আসিয়াই বলিলেন, ‘দ্রৌপদী, বড় ক্ষুধা হইয়াছে, কিছু খাইতে দাও।’

 দ্রৌপদী লজ্জিত হইয়া বলিলেন, ‘থালায় তো কিছুই নাই, কি খাইতে দিব।’

 কৃষ্ণ বলিলেন, ‘অবশ্য, কিছু আছে থালাখানি আন তো।’

 কাজেই দ্রৌপদী থালা আনিয়া উপস্থিত কবিলেন। উহাব একপাশে এখনো এক কণা শক-ভাত লাগিযাছিল। কৃষ্ণ সেই এক বিন্দু শাক-ভাত মুখে দিয়া বলিলেন ‘ইহাতেই বিশ্বাত্মা তুষ্ট হউন৷’ তারপর ভীমকে বললেন, ‘মুনিদিগকে ডাক৷’

 এ সকল কথা বলিতে যত সময় লাগিল, কাজেও তাহাব চেয়ে বড় বেশি লাগে নাই মুনিবা এতক্ষণে সবে স্নান শেষ কৰিছেন ইহার মধ্যে হঠাৎ তাঁহাদেব পেট ভবিয়া গেল। সকলে আশ্চর্য হইযা মুখ চাওয়া চাওযি কবিতে লাগিলেন। পেটে আব একটি হজমিগুলিও স্থান নাই। এদিকে যুধিষ্ঠির হয়তো কত কষ্ট কবিয়া আহারের আযোজন করিয়াছে, তাহাব নিকট গিযা কি করিয়া মুখ দেখাইবেন ভাবি চিন্তিযা দুর্বাশা বলিলেন, ‘এ যাত্রা আমবা বড়ই বেল্লিক হইয়া গেলাম। এখন যুধিষ্ঠিবের নিকট যাইতে অতিশয় লজ্জাবোধ হইতেছে, চল এখান হইতেই পলায়ন কবি৷’ কাজেই বিপদ কাটিয়া গেল৷

 এই সময়ে পাণ্ডবে কাম্যক বনে বাস কবিতেছিলেন। সেখানে আর-একটা ঘটনা হয় তাহাব কথা এখন বলিতেছি৷

 দুর্যোধনের ভগিনী দুঃশলাকে যে বিবাহ কবিয়াছিল, তাহাব নাম জয়দ্রথ। এই হতভাগা একদিন অনেক সৈন্য আর বন্ধু বান্ধব লইয়া পাণ্ডবদিগেব আশ্রমের নিকট দিয়া যাইতেছিল। পাণ্ডবেরা তখন শিকাব কবিতে গিয়াছেন, দ্রৌপদীর নিকট এক ধৌম্য ছাড়া আর কেহই নাই। দ্রৌপদীকে দেখিবামাত্র জয়দ্রথ ‘কেমন আছ? সব ভালো তো?' বলিয়া তাঁহার সহিত কথাবার্তা আবম্ভ কবিল৷

 একজন ভদ্রলোক বাড়িতে আসিলে তাহাব আদব যত্ন না কবিলে নয়। কাজেই দ্রৌপদী