পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৪৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৫২
উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র

উঠে আরো অনেকগুলো কালোজাম খেল।

 এ হল বহুকালের কথা। তখন ‘খাইয়ে’ বললে ভারি একটা গৌররে কথা হত। সে সময় এক ব্রাহ্মণ এই বাহাদুরির লোভে মারাই গিয়াছিলেন। কোন বড়লোকের বাড়িতে তাঁকে মাঝে মাঝে নিমন্ত্রণ করে, তাঁর যা ইচ্ছা, যত খুশি খেতে দেওয়া হত। একদিন সেখানে খেতে বসে বললেন, আজ আমি শুধু ছানা আর চিনি খাব। তাই তাঁকে এনে দেওয়া হল। তিনি তখন সাতসের ছানা চেঁছেপুছে শেষ করে, বিস্তর বাহাদুরি পেয়ে, বাড়ি এসে সেই রাত্রেই পেট ফেঁপে মারা গেলেন।

 আর-একটি ভটচাজ্জি মশায়েরও এ বিষয়ে খুব নাম ছিল। সকলে যখন তাঁর খাওয়া দেখে আশ্চর্য হত, তখন তিনি নিজের কপালে টোকা দিয়ে বলতেন ‘দেখছ কি? এইটুকু শুধু নিরেট আর সব পেট।’

 একটি ছেলের মনটি বড় ভাল, কিন্তু স্বভাবটি একটু পাগলাটে গোছের। সে একদিন রাত্রে এক জায়গায় গিয়েছিল—পূজা দেখতে! ঢুকার সময় তার বুট জোড়াটি খুলে বাইরে রেখে গিয়েছিল, ফিরে এসে দেখে, কে তা নিয়ে গেছে। ছেলেটি ত তাতে হেসেই অস্থির, সে বলল, “বেটা ভারি ঠকেছে! পুরনো জুতো চুরি করেছে দুমাসও পায়ে দিতে পারবে না।” যা হোক এখন বাড়ি ফিরে ত যেতে হবে;কাজেই শুধু পায়ে হেঁটে, ট্রাম ধরবার জন্য হেদোর ধারে এসে উপস্থিত হল; সেখান থেকে তার বাড়ি পঁচিশ মিনিটের পথ—পটলডাঙ্গায়। সে হেদোয় এসেই একখানা ট্রাম পেয়েছিলো, কিন্তু তখন সে ভাবল, এখান থেকে উঠে কেন নাহক ঠকি! সেই ছপয়সাই ত দিতে হবে,—আমি শ্যামবাজারে গিয়ে ট্রাম ধরে পয়সা আদায় করে নেব। বলে সে ত সেই শুধু পায়ে হেঁটে হেঁটে গিয়ে শ্যামবাজারে আড্ডায় উপস্থিত হয়েছে। সেখানে গিয়ে শুনল সেদিন আর ট্রাম পাওয়া যাবে না; হেদোর ধারে যেখানা পেয়েছিল সেখানা শেষ গাড়ি! সেদিন সে বাড়ি ফিরে এলে পর তার হাসির চোটে বাড়িসুদ্ধ লোকের ঘুম ভেঙে গিয়েছিল।

8

 বাংলা অক্ষরে যেমন অন্যসব ভাষায় সকল কথা লেখা যা—যেমন ‘আই গো আপ’, কিংবা কোন নাম যেমন ‘লর্ড কারমাইকেল’, ‘জেমস ওয়াট’, সেরকম কিন্তু সব ভাষায় চলে না। চীনা ভাষায় এক একটি অক্ষরের এক একটি কথা। একজন বাঙলি বাবু একজন চীনা ভদ্রলোককে বললেন, ‘আপনি আপনাদের ভাষার অক্ষরে আমার নাম লিখুন ত। আমার নাম ‘ধ্রুব।’ চীনা ভদ্রলোকটি অনেকক্ষণ ভেবেচিন্তে কতকগুলি হিজিবিজি কি যেন লিখলেন। সেই লেখা অন্য একজন চীনা ভদ্রলোককে পড়তে দেওয়া হল। সে বলল, ‘এতে দেখা রয়েছে দু-লুফা।’ একজন জাপানী ভদ্রলোক ট্রাফালগারের সম্বন্ধে জাপানীভাষায় কি যেন লিখছিলেন। তাঁর লেখার মধ্যে যেখানে ট্রাফালগার কথাটা আছে সেটা তিনি ইংরাজীতে