পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পড়ে।

চাষীরা যখন খোঁয়াড় তয়ের করছে, শিয়াল তখন হাসছে আর বলছে ‘আমার জন্যে, না মামার জন্যে? এমন সুন্দর ঘরে মামা থাকলেই ভালো হয়।’

তার পরদিনই সে বাঘকে গিয়ে বললে, ‘মামা, একটি বড় নিমন্ত্রণ তো এসেছে। রাজার ছেলের বিয়ে, সেখানে আমি গান গাইব, আর তুমি বাজাবে। আর খাব যা, তার তো কথাই নেই! তারা পালকি পাঠিয়েছে, যাবে মামা?’

বাঘ বললে, ‘তা আর যাব না! এমন নিমন্ত্রণটা কি ছাড়তে আছে! আবার তারা পালকিও পাঠিয়েছে!’

শিয়াল বললে, ‘সে কি যে-সে পালকি? এমন পালকিতে আর চড়নি মামা।’ এমনি কথাবার্তা বলে দুজনে সেই আখের ক্ষেতের ধারে এল, যেখানে সেই খোঁয়াড় রয়েছে। খোঁয়াড় দেখে বাঘ বললে, ‘খালি পালকি পাঠিয়েছে, বেয়ারা পাঠায়নি যে?’

শিয়াল বললে, ‘আমরা উঠে বসলেই বেয়ারা আসবে এখন।’

বাঘ বললে, ‘পালকির যে ডাণ্ডা নেই, বেয়ারারা কি করে বইবে?’

শিয়াল বললে, ‘ডাণ্ডা তারা সঙ্গে আনবে।’

একথা শুনে বাঘ যেই খোঁয়াড়ের ভিতর ঢুকেছে, অমনি ধরাস করে তার দরজা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তখন শিয়াল বললে, ‘মামা, দরজাটা বন্ধ করে দিলে আমি ঢুকব কি করে?’

বাঘ বললে, ‘তোমার ঢুকে কাজ নেই এবারের নিমন্ত্রণটা আমিই খাইগে।’

শিয়াল বললে, ‘বেশ কথা মামা! খুব ভালো করে পেট ভরে নিমন্ত্রণ খেও। কম খেও না যেন!’ এই বলে শিয়াল হাসতে-হাসতে তার দেশে চলে গেল।

তারপর চাষীরা এসে দেখল যে বাঘমশাই খোঁয়াড়ের ভিতর বসে আছেন। তখন তারা কি খুশি যে হল, কি বলব!

তারা সকলকে ডেকে বললে, ‘আন খন্তা, আন বল্লম,আন যে যা পারিস! খোঁয়াড়ে বাঘ পড়েছে। আয় তোরা কে কোথায় আছিস।’

অমনি সকলে ছুটে এসে বাঘকে মেরে শেষ করল।