পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তা দেখে শিয়াল বললে, ‘কি মামা, কিছু খেলে?’

বাঘ বললে, ‘খেয়েছি তো ভাগ্নে, কিন্ত বড্ড গলা ফুলেছে। তোমার তো পেট ফেঁপেছে, আমার কেন গলা ফুলল?’

শিয়াল বললে, আমি কিনা শিয়াল, আর তুমি কিনা বাঘ, তাই।’

লেজের ব্যথায় আর গলার ব্যথায় বাঘ ষোল দিন উঠতে পারলে না। এই ষোল দিন কিছু না খেয়ে সে আধমরা হয়ে গিয়েছে।

এমন সময় সে দেখলে যে, শিয়াল গা ঝাড়া দিয়ে দিব্যি চলে যাচ্ছে। তাতে সে আশ্চর্য হয়ে জিগগেস করলে, ‘কি ভাগ্নে, তোমার অসুখ কি করে সারল?’

শিয়াল বললে, ‘মামা, একটি ভারি চমৎকার ওষুধ পেয়েছি। আমি আমার হাত-পা চিবিয়ে খেলুম আর তক্ষুণি আমার অসুখ সেরে গেল। তারপর দেখতে-দেখতে নতুন হাত-পা হল।”

বাঘ বললে, ‘তাই নাকি? তবে আমাকে বলনি কেন?’

শিয়াল বললে, ‘তুমি কি আর তোমার হাত-পা চিবিয়ে খেতে পারবে? তাই বলিনি।’

এ কথায় বাঘ ভীষণ রেগে বললে, ‘তুই শিয়াল হয়ে পারলি, আর আমি বাঘ হয়ে পারব না।’

শিয়াল বললে, ‘তুমি দুটো ঠাট্রার ভয়ে অমন বিয়েটা ছেড়ে এলে! এখন যে হাত-পা চিবিয়ে খেতে পারবে, তা আমি কি করে জানব? তখন বাঘ বললে, ‘পারি কি না এই দেখ!’ বলে সে নিজের হাত-পা চিবিয়ে খেল। তারপর তিন-চার দিনের মধ্যেই ভয়ানক ঘাঁ হয়ে সে মারা গেল।


বাঘের রাঁধুনি

এক বাঘের বাঘিনী মরে গিয়েছিল। মরবার সময় বাঘিনী বলে গিয়েছিল, ‘আমার দুটো ছানা রইল, তাদের তুমি দেখো।’

বাঘিনী মরে গেলে বাঘ বললে, ‘আমি কি করে বা ছানাদের দেখব, কি করে বা ঘরকন্না করব।’

তা শুনে অন্য বাঘেরা বললে, ‘আবার একটা বিয়ে কর, তাহলে সব ঠিক হয়ে যাবে।’