পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৭৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ছোট্ট রামায়ণ
৭৫১

ঘুমায় কেমন দেখ, সীতারে খাইয়া।”
এই বলি তারে রাম যান মারিবারে
কষ্টেতে তখন পাখি কহিল তাঁহারে—
“মেরে তো আমায় বাপ গিয়েছে রাবণ,
তারপরে তুমি আর মেরো না রে ধন।
পলায়ে গিয়েছে দুষ্ট লয়ে সীতা মায়,
প্রাণ গেল, না পারিনু রাখিবারে তাঁয়।”
জটায়ুরে বুকে লয়ে দুভাই তখন,
কাঁদেন কাতর হয়ে, শিশুর মতন।
কিন্তু হায়, সেই ক্ষণে প্রাণ গেল তার
কিছুই কহিতে পাখি পারিল না আর।
সেথা হতে তারপর সীতারে খুঁজিয়া,
চলিলেন দুই ভাই ঘন বন দিয়া।
কবন্ধ রাক্ষস ছিল তাহার ভিতর,
কি আর কহিব সে যে কত ভয়ংকর।
মাথা নাই, গলা নাই, আছে শুধু ভুঁড়ি,
হাঁ করে রয়েছে তাই সারা বন জুড়ি।
থামের মতন তার বড়-বড় দাঁত,
যোজন জুড়িয়া দুই সর্বনেশে হাত।
একখানা চোখ দিয়া চায় কট্‌মট্‌,
হাতি মোষ যাই দেখে, ধরে চট্‌পট্‌!
শ্রীরাম লক্ষ্মণ যান সেই বন দিয়া,
খপ্‌ করে নিল বেটা তাঁদেরে ধরিয়া।
তখন বলেন তাঁরা, “খায় বুঝি গিলে,
এই বেলা কাটি হাত দুই ভাই মিলে।”
এই বলি দুই ভাই তলোয়ার দিয়া,
তাড়াতাড়ি হাত তার ফেলেন কাটিয়া।
গড়াগড়ি দিয়া কিবা চেঁচাইল তায়,
কহিল সে, “কে তোমরা? বল তা আমায়।”
শুনিয়া তাঁদের নাম বিনয়ে সে কয়,
“ভাগ্যেতে আমার হেথা এলে মহাশয়
এখন পোড়াও মোরে যদি দয়া করে
ঘুচিবে আমার দুঃখ, যাব নিজ ঘরে।”
আগুন জ্বালিয়া ভারি দুজনে তখন
কবন্ধে পোড়ান তায় শ্রীরাম লক্ষ্মণ।
অমনি দেখেন তাঁরা, কিবা চমৎকার,