পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৭৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
৭৬৮
উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র

দু-হাতে টানিয়া চুল ছিঁড়ে গোছা-গোছা,
হাঁচির ভয়েতে নাকে নাহি দেয় খোঁচা!
কানে জল ঢেলে তায় লাগায় কামড়,
আরো নাক ডাকে তায়, ঘড়র্-ঘড়র্৷
হাজার পাহাড়পানা হাতি দিয়া তবে,
ঘুরিয়া-ঘুরিয়া তারে মাড়াইল সবে৷
সুখ বড় পেল তায়, চোখ মেলে তাই,
উঠিয়া তুলিল বেটা এই বড় হাই!
অমনি সকলে আনি খেতে দিল তারে,
শুয়োর, হরিণ, মোষ হাজারে হাজারে।
সকল করিয়া শেষ কুম্ভকর্ণ কয়,
“কি লাগি জাগালে মোরে এমন সময়?”
জোড়হাতে কয় সবে, “বড়, বড় ডর!
মারি কাটি দিল সব, মানুষ-বান্দর!”
তাহা শুনি কুম্ভকর্ণ চলিল ত্বরায়,
যেথায় রাবণ আছে বসিয়া সভায়।
ভয়েতে বানর সব, তাহারে দেখিয়া,
“মাগো!” বলি দুই লাফে যায পলাইয়া৷
রাবণের কাছে গিয়া কুম্ভকর্ণ কয়,
“কি লাগি জাগালে মোরে, কহ মহাশয়৷”
রাবণ সকল তারে কহিল যখন,
সে কহিল, “কেন কাজ করিলে এমন?”
তায় কিন্তু রাবণের রাগ হল ভারি,
যুদ্ধে তাই কুম্ভকর্ণ যায় তাড়াতাড়ি৷
শূল হাতে ধায় সে যে পর্বতের মতো,
বানর ধরিয়া খায়, কাছে পায় যত৷
রুষিয়া কামড় তারা মারে তার গায়,
সে কামড়ে কুম্ভকর্ণ সুখ শুধু পায়৷
বানরেরা কিছু তার করিতে না পারে,
শরভ, ঋষভ, নীল সকলেই হারে৷
অঙ্গদ অজ্ঞান হল, হনু গেল হেরে,
সুগ্রীব পর্বত লয়ে এল তায় তেড়ে৷
পর্বত ভাঙিল ঠেকে রাক্ষসের গায়,
কুষিয়া তখন বেটা শূল হাতে ধায়৷
ভাগ্যেতে ভাঙিল শূল আসি হনুমান,
নইলে যাইত তায় সুগ্রীবের প্রাণ৷