পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৭৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ছোট্ট রামায়ণ
৭৭৩

তলোয়ার দিয়া তারে চায় কাটিবারে।
রুষিয়া কহিল হনু, ‘‘শোন্‌ দুষ্ট চোর,
মায়েরে কাটিলে আজ রক্ষা নাহি তোর।”
সে কথায় ইন্দ্রজিত নাহি দেয় কান,
কাটিয়া মায়ার সীতা করে দুই খান।
তখন কাঁদিল সবে হায়-হায় করি,
“সীতা, সীতা!” বলে রাম দেন গড়াগড়ি।
বুঝায়ে তখন তাঁরে কহে বিভীষণ,
“সীতারে কেটেছে, তাহা হয় কি কখন?
ফাঁকি দিয়া দুষ্ট বেটা ভুলায়ে তোমারে,
নিকুম্ভিলা নামে যজ্ঞ গেল করিবারে।
সে যজ্ঞ হইলে শেষ হারাবে সবায়,
নহিলে মরিবে নিজে, ভুল নাহি তায়।
ত্বরায় ধনুক লয়ে চলহ লক্ষ্মণ,
এ যজ্ঞ হইতে শেষ না দিব কখন।”
তখনি লক্ষ্মণে সাথে লয়ে বিভীষণ,
নিকুম্ভিলা যজ্ঞ যায় করিতে বারণ।
খেঁকায়ে রাক্ষস এল তাদের দেখিয়া,
শব্দ শুনি ইন্দ্রজিত আসিল ছুটিয়া।
লাগিল বিষম যুদ্ধ তখন সেথায়,
যজ্ঞ শেষ করা আর না হইল তায়।
লক্ষ্মণ হনুর পিঠে, ইন্দ্রজিত রথে,
দুইজনে কত যুদ্ধ হয় কত মতে।
মারিল সারথি ঘোড়া রাক্ষস বেটার,
হাতের ধনুক তার কাটিল দুবার।
নুতন সারথি আনে রথ সাজাইয়া,
বিভীষণ ঘোড়া তার পিষে গদা দিয়া।
রোষে নিল ইন্দ্রজিত শকতি তখন,
কাটিয়া দিলেন তাহা আমনি লক্ষ্মণ।
ইন্দ্র অস্ত্র মারিলেন ধনুকে জুড়িয়া,
অসুর কাটেন ইন্দ্র যেই অস্ত্র দিয়া।
তাহা দেখি রাক্ষসের উড়িল পরাণ,
সেই অস্ত্রে মাথা তার হল দুইখান।
নাচিল বানর তায় ‘জয়-জয়’ বলে,
দুন্দুভি বাজাল সুখে দেবতা সকলে।
হেথায় সবারে ডাকি কহিছে রাবণ,