মরে বুঝি হায় যায় বিভীষণ!
কে বাঁচাবে তার প্রাণ?
এই ভাবি মনে রাবণে লক্ষ্মণ
মারেন কতই বাণ৷
রথের উপরে বসিয়া রাবণ
কাঁপে রাগে থরথর্,
জ্বলে কুড়ি চোখ বিশ পাটি দাঁত
করে তার কড়্মড়্৷
ছাড়ি বিভীষণে লক্ষ্মণেরই পানে
শকতি ছুঁড়িয়া মারে,
মহা শব্দে তাহা পড়ি তাঁর বুকে
অজ্ঞান করিল তাঁরে৷
‘হায়-হায়’ বলে বানর সকলে
শকতি খুলিতে ধায়,
বাণেতে বারণ করিল রাবণ—
হায়, কি হবে উপায!
কেঁদে-কেঁদে রাম তোলেন শকতি
নিজে আসি তারপর
কত বাণ তাঁরে মারিল রাবণ
তাহে নাই কিছু ডর৷
বোষে দেহ তাঁর উঠিল কাঁপিয়া
শুকাল চোখের জল,
ধনুকেতে বাণ সূর্যের মতন
করি ওঠে ঝলমল৷
আকাশ পাতাল ছাইয়া তখন
ডাকিয়া ছুটিল বাণ,
আধমরা হয়ে অভাগা রাবণ
পলায় লইয়া প্রাণ৷
সেথা ছিল বুড়া সুষেণ বানর
কবিরাজ বড় ভারি,
হনুরে পাঠায়ে তখনি ঔষধ
আনায় সে তাড়াতাড়ি৷
বাস পেয়ে তার হাসিয়া লক্ষ্মণ
সুখেতে বসেন উঠি
অমনি আবার বিষম রোষেতে
রাবণ আইল ছুটি৷
পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৭৭৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ছোট্ট রামায়ণ
৭৭৫