পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৭৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৭৮
উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র

সোনার দোলায় তুলিয়া রাবণে
শ্মশানে আনিল পরে,
চন্দনের চিতা সাজায়ে তাহারে
পোড়াল যতন করে৷

দুঃখিনী সীতার কথা শুন তারপর,
মায়ের চোখেতে জল ঝরে ঝরঝর্
ময়লা কাপড়ে মাতা পড়িয়া ধূলায়,
এমন সময় হলু আইল সেথায়,
হনু বলে, “শুন মাগো, মরিল রাবণ,
ছ মা চোখের জল, উঠগোঁ এখন৷”
সুখেতে সীতার মুখে কথা নাহি সরে,
পাবেন রামের দেখা এতদিন পরে!
হায় রে দুঃখের কথা কহিব কি আর—
সেই রাম না করিল আদর সীতার!
ভ্র‍ূকুটি করিয়া তিনি কহিলেন তাঁরে,
“যেথা ইচ্ছা যাও সীতা, চাহি না তোমারে৷
ছিলে তুমি এতদিন রাক্ষসের সনে,
বাস কিনা ভালো আর কহিব কেমনে?”
সীতা বলিলেন, “হায়, একি শুনি আজ?
হায় রে, আমার আর বাঁচিয়া কি কাজ?
আগুন জ্বালিয়া তবে দাও গো লক্ষ্মণ
তাহাতে পুড়িয়া সীতা মরিবে এখন৷”
কাঁদিয়া লক্ষ্মণ দেন জ্বালাইয়া চিতা,
অমনি ঝাঁপায়ে তায় পড়িলেন সীতা৷
“হায়-হায়” করি সবে কাঁদিল তখন,
আগুন শীতল হল জলের মতন৷
না পোড়ে মায়ের চুল, না পোড়ে আঁচল
সূর্যের মতন মাতা হলেন উজল!
যতনে তখন অগ্নি কোলে লয়ে তাঁরে,
উঠিয়া কহেন আসি সভার মাঝারে,
“লই রাম, লহ এই সীতারে তোমার,
নাই-নাই-নাই দোষ কিছু নাই তাঁর৷”
আদরে সীতারে রাম নিলেন এবার,
তখন সুখের সীমা না রহিল আর৷
আনন্দ করিল কল সকলে মিলিয়া,