পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৮৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৯০
উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র

আপত্তি নেই।

 ফ্ল্যামিঙ্গোর গায়ের রঙ সব দেশে একরকম নয় তবে প্রায়ই সাদা না-হয় লালচে গোছের হয়। সব চেয়ে সুন্দর রঙ আমেরিকার ফ্ল্যামিঙ্গোদের। উজ্জ্বল গোলাপী রঙের পালক, লাল চোখ, লাল ঠোঁট, লাল পা। জলে হেঁটে বেড়ান, সাতার কাটা, আকাশে ওড়া, এ-সব বিষয়ে ফ্ল্যামিঙ্গোরা খুব ওস্তাদ। কিন্তু শরতের শেষে যখন তাদের পালক প’ড়ে নূতন পালক ওঠে, তখন বেচারাদের দুরবস্থার একশেষ! তারা না পারে উড়তে, না পারে সাঁতার কেটে পালাতে এইসময় মানুষেরা তাড়া করে সহজেই তাদের ধরে আনে আর তাদের পালক নিয়ে বাজারে বিক্রি করে।

 যেমন অদ্ভুত পাখি তেমনি অদ্ভুত তার বাসা। পা দিয়ে কাদার ঢিপি বানিয়ে তার মধ্যে গর্ত করে নীল রঙের ডিম পেড়ে রাখে। ডিমে তা দিবার সময় পা গুটিয়ে সেই ঢিপির উপর বসতে হয়।


জন্তুর পরিচয়

 লোকে বলে, বিড়াল নাকি বাঘের মাসি হয়; আর শেয়াল নাকি হয় তার ভাগ্নে। বিড়াল যে বাঘের মাসি, এ কথা মানতে আমি কতক রাজি আছি কিন্তু শেয়াল যে তার ভাগ্নে, এটা আমার কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছে না। সেই ছেলেবেলা থেকে শুনে আসছি যে, ভাগ্নের চেহারা তার মামার মতো হয়। কিন্তু শেয়ালের চেহারা কি বাঘের মতো? বাঘের মুখ হাঁড়িপানা, শেয়ালের মুখ ছুঁচাল। বাঘের মতো শেয়ালেরও বড়-বড় ধারাল দাঁত আছে বটে, কিন্তু সে তেমন ধারালও নয়, তেমন বড়ও নয়। তারপর পায়ের নখগুলোর দিকে চেয়ে দেখ। বাঘের বাঁকা বাঁকা নখগুলো কি ধারাল আর মজবুত, আর সেগুলোকে ইচ্ছামতো কেমন খাপে ঢুকিয়ে রাখতে আর বার করতে পারা যায়।

 বাঘের নখ পরীক্ষা করে দেখবার সুবিধা হবে না? আচ্ছা, না হয় বিড়ালের নখই দেখ। তোমাদের ‘মেনী’ যখন তোমাদের সঙ্গে খেলা করে, তখন তার পায়ের দিকে চেয়ে দেখ তো। তখন সে যত্নের সহিত তার নখগুলিকে খাপে ঢুকিয়ে রাখে। তখন তো আর তার নখের দরকার নাই। সকল সময় নখ বার করে রাখলে সে ঘষায় ঘষার ভোঁতা হয়ে যাবে যে, তাহলে তো তার একটি মস্ত হাতিয়ারই মাটি হয়ে গেল। তাই কাজের সময় ছাড়া অন্যসময় মেনী তার নখ বার করে না। কিন্তু একটি ইঁদুর তার সামনে আসুক তো, তখন দেখবে সে কেমন নখ বার করে তাকে খাবলে মেরে ধরবে। আমি কতবার দেখেছি।

 অবশ্যি তোমাদের মেনীটি পোশাকী হতে পারে। তার হয়তো ইঁদুর ধরার অভ্যাস নাই। আর অভ্যাস থাকলেও তোমাদের তামাশা দেখাবার খাতিরে এক্ষনি একটি ইঁদুর এসে তার সামনে হাজির হচ্ছে না। যাহোক এর আর একটা উপায় আছে। মেনীকে যদি এমন কোনো জায়গায় তুলে দিতে পার যে, সেখান থেকে তাকে পিছলে পড়তে হয়, তা হলে দেখবে সে কেমন নখ বার করে আটকে থাকবার চেষ্টা করে।

 মেনীটি যদি শান্ত হয়, আর তার আঁচড়াবার অভ্যাস না থাকে, তা হলে, সকলের চেয়ে