পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৯০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯০০
উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র

যাইবার সময় ক্রমেই শান্তভাব ধারণ করিল।

 একবার একটা ধূমকেতু হঠাৎ দুইভাগ হইয়া যায়। সেই দুইভাগ স্বতন্ত্র দুইটা ধূমকেতুর মতন একই পথে চলিতে থাকে। এই ধূমকেতুর নাম “বিয়েলার ধূমকেতু” অর্থাৎ বিয়েলা নামক একজন পণ্ডিত ইহার আবিষ্কার করিয়াছিলেন। বিয়েলার ধূমকেতু ৬/ বৎসর পরপর ফিরিয়া আসিত। ১৮৪৫ সালে এই ধূমকেতু দুভাগ হইয়া গেল;আবার ১৮৫২ সালে সেই দুইভাগ একসঙ্গে ফিরিয়া আসিল। ইহার পর আর এ পর্যন্ত তাহাদিগকে দেখা যায় নাই। কিন্তু এই ধূমকেতু আকাশে যে পথে চলিত, পৃথিবী সেই পথের কাছ দিয়া যাইবাব সময় ক্রমাগত তিনবার খুব উল্কাবৃষ্টি হইয়াছে। পণ্ডিতেরা বলেন, যে বিয়েলার ধূমকেতু হইতেই এই উষ্কাগুলির উৎপত্তি। ১৮৮২ সালে খুব বড় একটা ধূমকেতু উঠিয়াছিল। ইহার পর আর এত বড় ধূমকেতু দেখা যায় নাই এই ধূমকেতুর লেজ দশকোটি মাইল লম্বা ছিল। এই ধূমকেতুর ছবিতে দেখ, তারাগুলি তাহার ভিতর দিয়া কেমন স্পষ্ট দেখা যাইতেছে। ইহার মাথার চারিদিকে এবং সামনে খানিকদূর পর্যন্ত খুব পাতলা একখানি আবরণের মত দেখা যায়। লেজটি কেমন একটু বাঁকা দেখ। মাথাটাই খুব উজ্জ্বল, আর সেই দিকে সূর্য আছে। অনেক সময় মাথার ভিতরে আবার একটি বীচির মতন দেখা যায়। মোটামুটি ধূমকেতুর চেহারা এইরূপ হয়; তবে কোন দুইটি ধূমকেতুর চেহারাই অবিকল একরূপ হয় না।


স্যাণ্ডো

 একটা ষণ্ডা ছেলে একটা রোগা ছেলেকে মারিয়াছিল। রোগা ছেলেটা উল্টাইয়া মারিতে সাহস পাইল না। সে বলিল যে, “আমার গায়ে খুব জোর থাকলে তোকে দেখাইতাম।”

 বাস্তবিক গায়ে খুব জোর থাকাটা নেহাত মন্দ নয়। পাঠক পাঠিকারা কি মনে করেন জানি না; কিন্তু আমি যদিও খুব বেশী রোগা নই, তবু আমার মনে হয়, যে গায়ে আরো অনেকখানি জোর থাকিলে ভাল হইত।

 নিজের গায়ে জোর থাকিলে ত ভাল লাগিবারই কথা। অন্যের গায়ে জোর থাকিলে, তাহার কথা বলিয়াই কত সুখ পাওয়া যায়। সেই জন্যই হনুমান, ভীম, ইঁহারা সকলের এত প্রিয় হইয়াছেন। আর সেই জন্যই আজ স্যাণ্ডে সাহেবের সম্বন্ধে কিছু বলা হইতেছে।

 স্যাণ্ডো জাতিতে জর্মন। পৃথিবীতে এখন ইনিই সকলের চাইতে বলিষ্ঠ লোক। ছেলেবেলা ইনি রোগ ছিলেন। এমন কি, ইহার মা-বাপ মনে করিয়ছিলেন, যে ইনি খুব বেশিদিন বাঁচিবেন না। এই স্যাণ্ডো খালি নিজের চেষ্টায় এখন পৃথিবীর মধ্যে সকলের চাইতে বলবান। আর, তিনি বলেন যে, চেষ্টা করিলেই সকলেই তাঁহার মত হইতে পারেন।

 আঠার বৎসর পর্যন্ত স্যাণ্ডো খুবই রোগী ছিলেন। ইহার পর এনাটমি শাস্ত্র পড়িয়া, তিনি এক নূতন ব্যায়াম প্রণালী অনুসারে ব্যায়াম করাতে, তিন বৎসরের মধ্যে তাঁহার শরীরের বল ভয়ানক বাড়িয়া গেল।

 এই সময়ে স্যাম্‌সন্‌ আর তাহার ছাত্র সাইক্লপ, এই দুজনে পালোয়ান, লণ্ডন নগরে