পাতা:উভয় সঙ্কট - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪
দারােগার দপ্তর, ১৬০ সংখ্যা।

পাহারওয়ালা ছিল, তাহারাও নামিল। আমরা বাড়ীর মধ্যে প্রবেশ করিলাম। যে স্থলে যে অবস্থায় আমরা আসামীকে প্রথমে দেখিতে পাইয়াছিলাম, ইন্সপেক্টার সাহেব সেই স্থান দেখাইয়া সমস্ত বর্ণনা করিলেন। এক্ষেত্রে আমার বিশেষ প্রশংসাও সাহেব করিলেন। আমি পশ্চাৎদিক হইতে সেরূপভাবে আসামীকে কায়দা করিয়া না ধরিলে, নিশ্চয়ই সেই স্থলে আরো দুই তিনটা খুন হইত, কারণ আসামীর পিস্তলের আরো দুইটা নল যে গুলিভরা ছিল, সে পিস্তল পরীক্ষা করিয়া ইন্সপেক্টার সাহেব তাহা জানিতে পারিয়াছেন। বড় সাহেব কোন কথা কহিলেন না, কেবল একটিবার আমার দিকে কট্‌মট্ করিয়া চাহিয়া দেখিলেন।

 তার পর আমরা সকলে উপরে উঠিলাম। যে ঘরে লাস ছিল, প্রথমে সেই ঘরেই সকলে উপস্থিত হইলাম। পুলিস-সার্জ্জন ক্ষতস্থান পরীক্ষা করিয়া কহিলেন, “রাইট ভেণ্টিকেলের মধ্যে গুলি প্রবেশ করিয়াছে, সেই কারণ আঘাতের দুই তিন মিনিটের মধ্যেই মৃত্যু হইয়াছে।” বড় সাহেব কহিলেন,—“আসামী যে বলে, এ ব্যক্তি আত্মহত্যা করিয়াছে—সে সম্বন্ধে আপনার মত কি? আহত ব্যক্তি যেরূপভাবে চিৎ হইয়া পড়িয়া আছে—আত্মহত্যাতে কি এরূপ হয়—সেই বিষয় পরীক্ষা করিবার জন্যই আপনাকে এই ভোরের সময় কষ্ট দিলাম।

 পুলিস-সার্জ্জন কহিলেন,—“এ আত্মহত্যা নহে। হত ব্যক্তি যেভাবে পড়িয়া আছে, আমি কেবল তাহা দেখিয়া এ কথা বলিতেছি না। গুলির দ্বারা আত্মহত্যার অন্য পরীক্ষাও আছে। গুলি দ্বারা আত্মহত্যা করিবার সময় মানুষে পোষাক পরিয়া আত্মহত্যা করে না। আর আমাদের প্রধান পরীক্ষা এই—