পাতা:উভয় সঙ্কট - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২
দারােগার দপ্তর, ১৬০ সংখ্যা।

 সে ব্যাটার কি সাহস! এই ঘটনায় এই খুনী আসামী যে এক জন ছদ্মবেশী বড় লোক, সে কথা আমার মনে আরো দৃঢ় বিশ্বাস হইয়া গেল। তখন আমি থানার ইন্‌স্পেক্টার সাহেবকে সেই সকল কথা কহিলাম। কিন্তু এই সকল প্রমাণ সত্ত্বেও তিনি আমার কথা হাসিয়া উড়াইয়া দিলেন এবং আমার উপর নানারূপ বিদ্রূপবাণ নিক্ষেপ করিতে লাগিলেন। সুতরাং সে সাহেবের নিকট আমি আর থৈ পাইলাম না। আমি সে স্থান হইতে সরিয়া পড়িলাম।

 তখন সন্ধ্যা হইবার আর অধিক বিলম্ব নাই। সুতরাং আমাদের ডিটেক্‌টিভ পুলিস আফিসে আসিয়া সেই দিনকার রিপোর্ট লিখিতে বসিলাম। এক ঘণ্টার মধ্যে সে রিপোর্ট লেখা শেষ হইলে আমি সেই রিপোর্ট লইয়া বড় সাহেবের নিকট চলিলাম। কারণ প্রতিদিন সন্ধ্যার সময় দৈনিক রিপোর্ট লইয়া বড় সাহেবের সহিত আমার সাক্ষাৎ করিবার হুকুম ছিল।

 আমি যখন বড় সাহেবের নিকট পৌঁছিলাম, তখন অপর কোন একজন পুলিস-কর্ম্মচারী তাঁহার কামরার মধ্যে ছিলেন, সুতরাং আমায় কিছুক্ষণ বাহিরে অপেক্ষা করিতে হইল। সে কর্ম্মচারী বাহির হইয়া আসিলে আমি কামরার মধ্যে গিয়া সাহেবকে এক লম্বা সেলাম দিলাম। সাহেব যেন আমারই অপেক্ষায় ছিলেন, এইরূপ ভাব প্রকাশ করিয়া আমায় আগ্রহের সহিত কহিলেন—“তোমার সংবাদ কি?”

আমি মুখে কোন কথা না বলিয়া আমার লিখিত রিপোর্টখানি সাহেবের সম্মুখে ধরিলাম। সাহেব বিশেষ মনোযোগের সহিত আমার রিপোর্ট পাঠ করিতে লাগিলেন। পাঠকালীন তাঁহার